প্রশ্নঃ আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় "নিহত হব" এই নিয়তে কি যুদ্ধ করা জায়েয আছে?
উত্তরঃ
নিহত হওয়ার জন্য যুদ্ধ করা জায়েয নেই। বরং যুদ্ধ করতে হয় একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য, তাঁর কালেমা বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ যদি আপনাকে শাহাদাত দান করেন, তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ। শাহাদাত না দিলে আপনি সওয়াব ও গণিমত নিয়ে ফিরে আসবেন।
নিম্নোক্ত বিষয়গুলো উপরোক্ত কথাকে স্পষ্ট করে:
১) জিহাদ হয় আক্রমণাত্মক হবে নয়তো প্রতিরোধমূলক, তবে উদ্দেশ্য আল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করা। তাহলে আপনার কথামতো জিহাদ যদি "আপনি শহীদ হিসেবে নিহত হবেন" এই উদ্দেশ্যে বিধিবদ্ধ হতো, তবে তো অর্থ এরকম দাঁড়াবে যে, আল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করার জন্য জিহাদের বিধিবদ্ধতা বাতিল হয়ে যাবে। সর্বশেষ ফলাফল এই দাঁড়াবে যে, মুসলিম শুধু শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষায় মৃত্যু কামনা করবে, আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে নয়; জিহাদের যে প্রকারই হোক না কেন।
২) শাহাদাত দ্বারা যদি কেবল যুদ্ধের মাঝে নিহত হওয়াই উদ্দেশ্য হতো, তবে বর্ম পরিধান করা, হেলমেট পড়া এবং শত্রুদের আঘাত ও তীর থেকে বাঁচার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া মুস্তাহাব হতো না। এর আরো অর্থ দাঁড়াবে যে, রাসূল ﷺ যখন এগুলো পড়েছেন, তখন তিনি শাহাদাতের তামান্না করেননি!! আলোচ্য কথকের কথা অনুযায়ী।
৩) যুদ্ধের ময়দানে নিহত হতে চাওয়া শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষায় যারাই যুদ্ধের ময়দানে নিহত হবে, সবাইকে তো তাই বলতে হবে। অথচ নির্দিষ্টভাবে এই বিষয়ে হাদীস এসেছে: "আল্লাহই ভালো জানেন কে তাঁর পথে জিহাদ করছে।" অর্থাৎ ময়দানে যারাই নিহত হবে, তারাই শহীদ হবে না।
যেসব আলেমরা শহীদি মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষার বৈধতার আলোচনা করেছেন, তারা মূলত আমাদের প্রথম পয়েন্ট উদ্দেশ্য করেছেন: আল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করার জন্য আল্লাহর পথে জিহাদ করতে হবে। শাহাদাত পেলে ভালো, নচেৎ সওয়াব ও গণিমত নিয়ে ফিরবে।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
"মহান আলেমদের সম্মান দেওয়া ছাড়া কেউ দলীলের অনুসরণ করছে বললে তার কথা বিশ্বাস করবেন না। সুন্নী ব্যক্তি যেমন দলীলের অনুসরণ করে, তেমনি আলেমদের পথে চলে।
আর মুমিনদের পথের অনুসরণের অন্তর্ভুক্ত অন্যতম বিষয় হলো: আলেমদের সম্মান করা ও মর্যাদা দেওয়া।
অতএব দলীলকে সামনে রাখতে হবে এবং আলেমদের সম্মান করতে হবে।"
✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
"মুহাররমের দশ তারিখের সাথে নয় তারিখ মিলিয়ে রোজা রাখার বিধানের পিছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ আকীদার পাঠ নিহিত রয়েছে, যেটা বোঝা জরুরি।
আর সেটা হলো: কাফেরদের বিরোধিতা ও তাদের সাদৃশ্যতা থেকে বিরত থাকা।
এটাই ছিল রাসূল ﷺ এর ইবাদত ও আদতের (স্বাভাবিক চলাফেরায়) ক্ষেত্রে চিরাচরিত রীতি।"
✍️শায়খ ড. সালেহ আস-সিনদী হাফিযাহুল্লাহ।
#পরিত্যক্ত_সুন্নাহ-০২
পরিত্যক্ত সুন্নাহ সম্পর্কে কয়েকটি জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ
🌹জ্ঞাতব্য-১: কোনো হাদীসের সনদ সহীহ হওয়া মানেই সেটা সুন্নাহ নয়। কারণ হাদীসের মাঝে:
•'আম মাখসূস তথা নির্দিষ্টতা-বোধক ব্যাপকার্থের হাদীস আছে।
•মুতলাক মুকায়্যাদ তথা শর্তযুক্ত হাদীস আছে।
•মুহকাম নয়, বরং মুতাশাবিহ হাদীস আছে।
আবার কিছু হাদীসের সনদ সহীহ হলেও তার একটা গোপন ত্রুটি থাকে। সেটা হলো, সালাফগণ সে অনুযায়ী আমল না করা।
এজন্য অবশ্যই আপনার নিকট সহীহ প্রমাণিত হাদীসটির ক্ষেত্রে সালাফদের আমল আছে কিনা তা দেখবেন এবং তার অর্থ ও ফিকহ বোঝার জন্য আলেমদের কথামালা বিবেচনায় রাখবেন।
🌹জ্ঞাতব্য-২: কিছু সুন্নাহ রয়েছে, যেগুলো সহীহ সনদ বিশিষ্ট মারফূ' হাদীসে পাওয়া যায় না। বরং
•সাহাবীদের থেকে বর্ণিত হয় অথবা
•আলেমদের স্পষ্ট ভাষ্য থাকে অথবা
•আহলুস সুন্নাহর আলেমগণ সেটিকে সুন্নাহ বলে অভিহিত করেছেন।
এই জ্ঞাতব্য বিষয়টির অবতারণা এজন্যই করা হয়েছে, যাতে করে ইমামদের লিখিত সুন্নাহর কিতাবগুলো এবং সালাফদের আসার বিষয়ক কিতাবগুলো গবেষণা করতে মানুষ আগ্রহী হয়; কারণ এইসব গ্রন্থে এমনো কিছু সুন্নাহ এসেছে যা মারফূ' মুসনাদ গ্রন্থগুলোতে আসেনি।
🌹জ্ঞাতব্য-৩: কোনো বিষয় অনুসৃত সুন্নাহ হিসেবে সাব্যস্ত হলে এবং লোকজনের সেটা পরিত্যাগ করা স্পষ্ট হলেই কেবল সেটাকে "পরিত্যক্ত সুন্নাহ" বলা যাবে। আর এরকম সুন্নাহ কেউ জাগ্রত করলে নিজে করার সওয়াব তো পাবেই, পাশাপাশি কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে; কারো সওয়াবে কোনো কমতি করা হবে না।
ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ (হা/১০১৭) মুনযির ইবনু জারীর থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমরা ভোরের দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় তার কাছে পাদুকাবিহীন, বস্ত্রহীন, গলায় চামড়ার আবা পরিহিত এবং তরবারি ঝুলিয়ে একদল লোক আসল। এদের অধিকাংশ কিংবা সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। অভাব অনটনে তাদের এ করুণ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখমণ্ডল পরিবর্তিত ও বিষন্ন হয়ে গেল। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, অতঃপর বেরিয়ে আসলেন। তিনি বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহুকে আযান দিতে নির্দেশ দিলেন। বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু আযান ও ইকামাত দিলেন। সালাত শেষ করে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে মানব জাতি! তোমরা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র ব্যক্তি থেকে (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন। ..... নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী"- (সূরা আন নিসা ৪ঃ ১)। অতঃপর তিনি সূরা হাশরের শেষের দিকের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। প্রত্যেক ব্যক্তি যেন ভবিষ্যতের জন্য কী সঞ্চয় করেছে সেদিকে লক্ষ্য করে"- (সুরাহ আল হাশর ৫৯ঃ ১৮)।
অতঃপর উপস্থিত লোকদের কেউ তার দীনার, কেউ দিরহাম, কেউ কাপড়, কেউ এক সা' আটা ও কেউ এক সা' খেজুর দান করল। অবশেষে তিনি বললেন, "অন্ততঃ এক টুকরা খেজুর হলেও নিয়ে আসো"। তখন আনসার সম্পপ্রদায়ের এক ব্যক্তি একটি বিরাট থলি নিয়ে আসলেন। এর ভার তার হাত বহন করতে পারছিল না। সাহাবী বলেন, অতঃপর লোকেরা সারিবদ্ধভাবে একের পর এক দান করতে থাকল। ফলে খাদ্য ও কাপড়ের দু'টি স্তুপ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক খাঁটি সোনার ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে হাসতে লাগল।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে সে তার কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে সে এর বিনিময়েও সাওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সাওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোন অংশেই কমবে না।"
আল্লাহই তাওফীকদাতা।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
🚦"আপনার দুনিয়া অন্ধকার" হলে লেখাটি আপনার জন্য
হে মুসলিম ভাই!
আপনার চোখে যখন পুরো দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যাবে; তখন স্মরণ করুন যে, আল্লাহই হলেন আসমান ও জমিনের আলো। অতএব দুনিয়ার অন্ধকার আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
দুনিয়ার সব দরজা যখন আপনার মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হয়; আপনি দুনিয়া ও আখিরাতের দয়াময় প্রভুর দরজায় কড়া নাড়ুন, সে দরজা তো বন্ধ হবার নয়। সহীহ মুসলিমে (হা/২৭৫৯) আবু মুসা রাযিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে রাসূল ﷺ থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "দিনের আলোয় পাপ করা পাপী যেন রাতের আঁধারে আল্লাহর কাছে তওবা করতে পারে, সেজন্য আল্লাহ স্বীয় হাতকে রাতের বেলা বাড়িয়ে দেন। রাতের অন্ধকারে গুনাহ করা গুনাহগার বান্দা যেন দিনের বেলায় তওবা করতে পারে, সেজন্য আল্লাহ স্বীয় হাতকে দিনের বেলায় বাড়িয়ে দেন। পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত এভাবে চলতেই থাকবে।"
শক্তিমানরা তাদের শক্তি নিয়ে আপনার উপর চড়াও হলে চিন্তিত হবেন না, বরং দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন যে, আপনার মহান প্রতিপালক মহা শক্তিধর এবং পরাক্রমশালী। আর অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য সন্নিকটে।
ধনকুবেররা স্বীয় সম্পদ নিয়ে ঔদ্ধত্য করলে (স্মরণ করুন), আল্লাহ বলেছেনঃ "মহিমান্বিত মূলত আল্লাহ; যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই; সম্মানিত আরশের অধিপতি তিনি।" -(সূরা মুমিনূন, ১১৬)
উচ্চবংশীয়রা নিজ বংশের অহমিকায় লিপ্ত হলে আল্লাহর এই কথা মনে করুন: "আল্লাহর কাছে সে-ই ব্যক্তি সম্মানিত, যে তোমাদের মাঝে যত বেশি তাকওয়াবান। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সম্যক অবগত।" -(সূরা হুজুরাত, ১৩)
সময় দীর্ঘ হচ্ছে, অথচ আপনার স্বপ্ন ও লক্ষ্য দূরে সরে যাচ্ছে, নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে; এরকম হলে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন, তাঁর কাছেই চান, তাঁরই করুণা ভিক্ষা করুন; তিনি তো অতি নিকটে, আপনার দূরকে তিনি কাছের করে দেবেন, কঠিনকে সহজে পরিণত করবেন, অগম্য গন্তব্যকে নাগালের মধ্যে এনে দেবেন। আল্লাহ বলেনঃ "আর আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করলে বলে দিন, নিশ্চয়ই আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে। -(সূরা বাকারা, ১৮৬)
হে মুসলিম! আল্লাহর উপর অহঙ্কার করে তাঁকে ডাকা বাদ দিয়েন না, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই হারাবেন। আল্লাহ বলেনঃ "তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন: ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা অহংকারবশতঃ আমার কাছে দোয়া করা থেকে বিমুখ, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।" -(সূরা গাফির, ৬০)
রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "আল্লাহ বলেন: হে আদম সন্তান! তুমি তো আমাকে ডাকোনি, আমার কাছে আশাও করোনি, (করলে) আমি তোমার সব কিছু ক্ষমা করতে কোনো পরোয়া করতাম না।
ওহে বনী আদম! আসমান ভর্তি গুনাহ নিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাইলে, সব গুনাহ মাফ করে দিতাম কোনো পরোয়া করতাম না।
ওরে আদম সন্তান! পুরো জমিন পরিমাণ ভুল নিয়ে আমার সাথে শিরক বিহীন অবস্থায় সাক্ষাৎ করলে, অনুরূপ মাগফিরাত নিয়ে আমি তোমার কাছে আসতাম।"
আপনি দোয়া করার জন্য রাতের শেষভাগকে বেছে নিন। আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ আমাদের মহান রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন: কে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। আমার কাছে কে চাইবে? তাকে তার চাওয়া দেব। আমার কাছে মাফ চাইবে কে? তাকে ক্ষমা করে দেব।"
সর্বান্তকরণে আল্লাহর দিকে ফিরুন, দোয়া কবুলের ব্যাপারে অবিচল আস্থা রাখুন। আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ" তোমরা দোয়া কবুলের ব্যাপারে দৃঢ়চিত্ত হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো। জেনে রেখো, গাফেল উদাসীন অন্তরের দোয়া আল্লাহ্ কবুল করেন না।"
হে মুসলিম ভাই! যে দোয়ায় আপনি আল্লাহকে আশা করেন, তাঁর প্রতি মনোনিবেশ করেন, তাড়াহুড়ো না করেন; আপনার সে দোয়া বাস্তবিকই কবুল হবে। আবু সাঈদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "কোনো মুসলিম যদি এমন দোয়া করে, যেটাতে কোনো পাপ নেই অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি নেই, তাহলে আল্লাহ এর বিনিময়ে তিনটির যেকোনো একটি দেবেন:
১) তার উদ্দিষ্ট বিষয়টি দ্রুতই দেবেন, নতুবা
২) আখিরাতের জন্য জমা রেখে দেবেন, আর নয়তো
৩) অনুরূপ কোনো বিপদ তার থেকে দূরে সরে দেবেন।
সাহাবীগণ এটা শুনে বললেন, তাহলে তো আমরা আরো বেশি বেশি দোয়া করব!
রাসূল ﷺ বললেনঃ আল্লাহ আরো অধিক দেবেন।"
অতএব আপনারা দোয়াতে মনোনিবেশ করুন। আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদেরকে রহম করুন।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করব। তা হলো: তাওহীদের মাসয়ালাগুলোতে সাব্যস্তকরণ, দলীল গ্রহণ এবং দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতার (وجه الاستدلال ) দিকগুলো খুব সূক্ষ্ম। অতএব এ বিষয়গুলো ব্যক্ত করতে যেমন বক্তাকে সূক্ষ্ম হতে হয়, তেমনি শ্রোতাকেও খুব মনোযোগী হতে হয়।
এটা বলার কারণ হচ্ছে, কিছু মানুষ বেশকিছু মাসয়ালা বুঝতে জটিলতার সম্মুখীন হয়। জটিল মনে হওয়ার কারণ- হয় তারা ভালোমতো পড়েনি আর নয়তো যথাযথভাবে কয়েদ করতে পারেনি। ফলে তারা:
-হয় (মূল মাসয়ালা থেকে) কোনো শব্দকে বাদ দিয়েছে, আর নয়তো
-কোনো শর্ত উল্লেখ ছিল কিন্তু ডিলিট করেছে তারা, অথবা
-মূল অর্থ নিয়ে নিজেদের ভাষায় প্রকাশ করে।
এরকম করা সঠিক নয়। এজন্যই এই ইলমের অন্বেষী ছাত্রদেরকে শ্রুত প্রতিটি বিষয়ে গভীর ধ্যানমগ্ন হতে হয়। কারণ প্রতিটা মাসয়ালারই কিছু নিয়ম-কানুন ও শর্ত শারায়েত থাকে। পাশাপাশি কোনো কোনো সময় কিছু মাসয়ালায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়, তো তখন কোনো ছাত্র হয়তো মাসয়ালার একটামাত্র অবস্থা শুনেছে, যেটার আরো বিস্তারিত আলোচনা দরকার, কিন্তু এখানে সংক্ষেপে আলোচিত হয়েছে।
আর এটা তো জানা কথা যে, সংক্ষিপ্ত ভাষায় কথা বলা আর বিস্তারিত আলোচনা করা দুটো এক নয়।"
✍️শায়খ সালেহ আলুশ শায়খ হাফিযাহুল্লাহ।
📚 আত-তামহীদ লিশরহে কিতাবিত তাওহীদ, ১৪৪ পৃষ্ঠা।
🚦সব সমস্যার সমাধান
আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়তে অটল থাকা, দ্বীনে ফিরে আসা এবং সবক্ষেত্রে তাকওয়া আঁকড়ে ধরা সব ধরনের সঙ্কট থেকে মুক্তির উপায় ও সামাজিক যাবতীয় সমস্যার সমাধান।
অর্থনৈতিক নিরাপত্তা,
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা,
বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিরক্ষা,
সামাজিক শৃঙ্খলা,
আত্মিক প্রশান্তি,
সামরিক নিরাপত্তা,
সবগুলোই আল্লাহর দ্বীনে অবিচল থাকার উপর নির্ভর করছে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ
إِنَّ اللّهَ لاَ يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنْفُسِهِمْ
"নিশ্চয় আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না; যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে। -[সূরা রা'দ, ১১]
অন্যত্র বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
নিশ্চয় যারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’ তারপর তাতে অবিচলিত থাকে, তাদের নিকট ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়ে বলে, ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তার সুসংবাদ নাও। -[সূরা ফুসসিলাত, ৩০]
আরো বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
নিশ্চয় যারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’ অতঃপর এই বিশ্বাসে অবিচলিত থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। -[সূরা আহকাফ, ১৩]
অন্যত্র বলেনঃ
وَأَلَّوِ اسْتَقَامُوا عَلَى الطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَاهُم مَّاء غَدَقاً
আর তারা যদি সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত থাকত, তাহলে তাদেরকে আমি অবশ্যই প্রচুর পানিতে সিক্ত করতাম। -[সূরা জিন, ১৬]
আল্লাহ আরো বলেনঃ
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ وَلَـكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذْنَاهُم بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
আর যদি সে সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তবে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও যমীনের বরকতের দ্বার উন্মুক্ত করে দিতাম, কিন্তু তারা মিথ্যারোপ করেছিল; ফলস্বরূপ আমরা তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছি। -[সূরা আ'রাফ, ৯৬]
ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা ‘ঈনাহ’ (নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পুনরায় মূল্য কম দিয়ে ক্রেতার নিকট হতে ঐ বস্তু ফেরত নিয়ে) ব্যবসা করবে এবং গরুর লেজ ধরে কেবল চাষ-বাস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে, আর জিহাদ ত্যাগ করে বসবে, তখন আল্লাহ তোমাদের উপর এমন হীনতা চাপিয়ে দেবেন; যা তোমাদের হৃদয় থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত দূর করবেন না; যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের দ্বীনের প্রতি প্রত্যাবর্তন করেছ। -[সহীহুল জামে'/৪২৩]
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
🚦অব্যক্ত কথা!
আমার অপরিচিত কারো ব্যাপারে যখন শুনি যে, সে সুন্নাহ বাস্তবায়ন ও হাদীস অনুযায়ী আমল করতে সচেষ্ট, তখন মন আমার আনন্দে নেচে ওঠে। আর কে-ইবা খুশি হবে না!?
তবে সুন্নাহর বাস্তবায়নের সাথে সাথে ব্যক্তিটি যেন এই সুন্নাহয় মুতাবা'আতের খেয়াল রাখে, এই তামান্না করি।
কারণ অনেক হাদীস অনুসরণের দাবিদারই সুন্নাহ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে শুধুমাত্র মুতাবা'আতের অযত্নের কারণে।
প্রাচীন কিছু আলেম বলতেনঃ "ফকীহরা ছাড়া অন্যদের জন্য হাদীস বিভ্রান্তিকর হতে পারে!"
এর ব্যাখ্যা হলো: যে ব্যক্তি হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, সে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন নজর রাখবেঃ
১) হাদীসটি যেন মুহকাম হয়, মানসূখ না হয়। কারণ:
-হতে পারে হাদীসটি মানসূখ, কিন্তু সে জানে না!
-হতে পারে হাদীসটি ব্যাপকার্থবোধক হলেও উদ্দেশ্য সুনির্দিষ্ট, কিন্তু সে জানে না।
-হাদীসটি শর্তযুক্ত (مقيد) হতে পারে, অথচ সে এটা খেয়াল করেনি।
উপরের যেকোনো একটি অবস্থা কোনো হাদীসের হলে, সেই হাদীস দিয়ে আমল করাটাই কিন্তু সুন্নাহ বিরোধী! কেননা তার মাঝ থেকে মুতাবা'আতের শর্ত গায়েব হয়ে গেছে।
২) হাদীসের সনদ সহীহ হয়েছে, এর রহিতকরণ বা অর্থ নির্দিষ্টকরণ অথবা শর্তযুক্তিও জানা যায় না; তবে সালাফগণ এর বিপরীত আমল করতেন! গবেষণায় এটাও হাদীস ত্রুটিযুক্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত, যেমনটি ইবনু রজব হাম্বলী রহিমাহুল্লাহ তার "ইলালুত তিরমিযী সগীর" এর ব্যাখ্যার শুরুর দিকে আলোচনা করেছেন।
৩) রাসূল ﷺ এর উদ্দেশ্য ও অবস্থা/পরিস্থিতি খেয়াল করা।
উদাহরণস্বরূপ, এই যে কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে একজন মেসেজ পাঠাল, সেখানে সে জুমার খতীবদের মিম্বারে জোর আওয়াজ ও চিল্লাচিল্লি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু লিখেছে। ব্যাপারটা হলো, খতীব কিন্তু রাসূলের ঐ হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, যেখানে এসেছে: রাসূল ﷺ খুতবা দিলে তাঁর শিরা ফুলে উঠত, কন্ঠ উঁচু হতো, যেন তিনি সৈন্যদের সতর্কবার্তা দিচ্ছেন; "সকালেই শত্রুবাহিনী আসল বলে, বিকেলেই আসল বলে..."। এটা তো সঠিক এবং এটাই সুন্নাহ।
কিন্তু কথা হলো, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি মাইক থাকা সত্ত্বেও এরকম করেছেন? মসজিদের এই ছোট্ট এরিয়ায় সাউন্ডবক্সের এই উচ্চ আওয়াজ কি মানুষের কান সহ্য করতে পারে? এই সময় মানুষের অবস্থা কি কখনো খেয়াল করেছেন?
তাহলে বোঝা গেল, সাউন্ড বক্সের সাথে এই সুন্নাহর বাস্তবায়নকারী কিন্তু মূলত সুন্নাহর মুতাবা'আত তথা অনুসরণ করল না, বরং বিরোধিতা করল! কেননা রাসূল ﷺ এই সুন্নাহ আদায় করেছেন মাইক ছাড়া অবস্থায়।
দ্বিতীয় আরেকটা উদাহরণ দেখুন। সুন্নাহর বাস্তবায়নের নামে যদি কেউ জুতা পড়ে সালাত আদায় করতে চায়, এজন্য যদি গালিচা বা কার্পেটের উপর সালাত আদায় করে, তাহলে সে মূলত সুন্নাহর খেলাফ করল! কারণ এর বাস্তবায়নে সে রাসূলের অবস্থা মানেনি।
আমার সাথে একটু চিন্তা করুন। ভেজা জুতায় যদি আপনি কার্পেটের উপর দাঁড়ান, তাহলে কার্পেটের কি অবস্থা হবে? রাস্তার ময়লা লেগে আছে, এই জুতো দিয়ে গালিচায় দাঁড়ালে কি অবস্থা হবে? রাসূল ﷺ কি বিছানা/চাদরের উপর জুতা পড়ে সালাত আদায় করেছেন?
অতএব, কোনো হাদীস বাস্তবায়ন করতে গেলে অবশ্যই সুন্নাহর মুতাবা'আতের কথা খেয়াল রাখতে হবে।
এজন্যই আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করি এই মর্মে যে, সব হাদীসই সুন্নাহ নয়!
আবার সব সুন্নাহ মারফূ' হাদীসের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুমের আমল থেকেও আমরা অনেক সুন্নাহ জানতে পারি। যেমন, রাতের নামাজের রাকাত সংখ্যা সাহাবীদের আমলের মাধ্যমে জানা যায়।
আল্লাহ তাওফীক দিন।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
🚦বড় বড় আলেমগণ মাযহাবের ভিত্তিতে ফতোয়া দেন কেন?
প্রশ্নঃ ইবনে আব্দুল বার্র, ইবনু কুদামা, নববী, ইবনুল হুমাম সহ বড় বড় আলেমদের দেখি মাসয়ালা নির্ণয় করতে মাযহাবের ভিত্তিতে কথা বলেন! তারা দলীলের ভিত্তিতে কথা বলেন না কেন?
উত্তরঃ তারা মাযহাবের ভিত্তিতে কথা বলেন বটে, তবে সেটা দলীলের সাযুজ্যতায় তাদের কাছে প্রাধান্য পাওয়া বিষয়েই করেন; অন্যথায় দলীল অনুযায়ী যেটাকে প্রাধান্যযোগ্য মনে হয়, সেটাই আলোচনা করেন।
ঐ সমস্ত আলেমগণ যখন মাযহাবের মাসয়ালাকে সাব্যস্ত করেন, তখন মূলত তাদের মতানুসারে যেটা প্রাধান্য পাবার সেটাকেই সাব্যস্ত করেন।
উদাহরণত, ইবনু কুদামা রহিমাহুল্লাহ "উমদাতুল ফিকহ" নামক গ্রন্থে মাযহাবের শুধু নির্ভরযোগ্য বর্ণনাটিই উল্লেখ করেছেন। উক্ত গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেন: "এটি একটি ফিকহ বিষয়ক বই, সাধ্যমতো সংক্ষিপ্ত করেছি এবং একটিমাত্র মতামতেই স্থির থেকেছি, যাতে করে পাঠকের জন্য এটা ভিত্তিস্বরূপ হয়। ফলে বর্ণনা ও দলীলের বিভিন্নতায় পাঠক সঠিকটা বুঝতে দ্বিধায় পড়বে না।"
এরপর "আল-মুকনি'" নামক গ্রন্থ লিখে তাতে মাযহাবের নির্ভরযোগ্য মতামত নিয়ে আসার পাশাপাশি অন্য আরেকটি মতামত নিয়ে এসেছেন, যেটা পূর্বেরটার কাছাকাছি। কিছু মাসয়ালায় আবার দুইরকম দৃষ্টিকোণ এনেছেন। ভূমিকায় উল্লেখ করেছেনঃ "এটি ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হান্বল আশ-শায়বানীর -আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হোন- মাযহাবের ভিত্তিতে লিখিত একটি ফিকহী কিতাব। আমি এটি লিখতে ও সাজাতে, সংক্ষিপ্তভাবে (ছাত্রদের) নাগালে রাখার ক্ষেত্রে নাতিদীর্ঘ পন্থা অবলম্বন করেছি। দলীল ও কারণ না এনে বেশিরভাগ হুকুম জমা করেছি যাতে করে কম কলেবরেই অনেক ইলম জমা হয়, মুখস্থ করতে ও বুঝতে যেন সহজ হয়, হাফেযদের জন্য তুষ্টকারী হয় এবং পাঠকদের জন্য উপকারী হয়।"
এরপর "আল-কাফী" নামক গ্রন্থ লিখেছেন। এই গ্রন্থে তিনি একই মাসয়ালায় ২/৩/৪ রকমের রেওয়ায়েত নিয়ে এসেছেন, সমান সংখ্যক দৃষ্টিকোণ এনেছেন, পাশাপাশি দলীল দিয়েছেন। এটার ভূমিকায় তিনি বলেনঃ "ইমামুল আইম্মাহ, রব্বানীল উম্মাহ আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হান্বল আশ-শায়বানীর -আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হোন- মাযহাবের উপর এই কিতাবটি লিখতে আমি আল্লাহর কাছে ইস্তিখারা করেছি। এতে আমি দীর্ঘতা ও সংক্ষিপ্ততার মাঝামাঝি থেকেছি, অতি সংক্ষেপে মাসয়ালার দলীলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করেছি, হাদীসগুলোকে বিভিন্ন আলেমদের গ্রন্থের দিকে সম্পৃক্ত করে দিয়েছি। যেন এই গ্রন্থটি এই বিষয়ে লিখিত সব গ্রন্থ থেকে যথেষ্ট হয়ে যায়, অন্তর্ভুক্ত বিষয়াবলিতে পাঠককে সন্তুষ্টকারী হয়, দীর্ঘতা ছাড়াই যেন উদ্দেশ্য পূরণ হয় এবং হুকুম ও দলীল বর্ণনার মাঝে সমন্বয়কারী হয়। আল্লাহর সাহায্য চাই, তাঁরই উপর ভরসা, তাঁর দরবারে পদস্খলন থেকে হেফাজতের মিনতি জানাই। তিনি যেন আমাদেরকে নিয়ত, কথা ও কাজে সততা দান করেন। আমাদের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে যেন তাঁর কাছাকাছি যাওয়ার মাধ্যম ও উপকৃত হবার তাওফীক দেন। এই গ্রন্থের মাধ্যমে আমাদেরকে ও মুসলিমদেরকে উপকার দান করেন। আমাদের এই কর্মকে বরকতময় করুন। তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট, কতই না উত্তম ভরসা তিনি।"
খেলাফি বিষয়ে লিখিত এই বইগুলো মাযহাবেরই অন্তর্ভুক্ত।
ফিকহী মাযহাবগুলোর মতবিরোধ নিয়ে তিনি "আল-মুগনী" নামক আলাদা একটি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। সেই গ্রন্থে তিনি মাযহাবের যে বর্ণনাটি তার কাছে সঠিক মনে হয়েছে, সেটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
যেকোনো মুসলিম ব্যক্তি ইজতিহাদের স্তরে পৌঁছে গেলে দলীলের আলোকে প্রাধান্যযোগ্য মাসয়ালা বিবেচনা করা তার জন্য আবশ্যক।
আর মুত্তাবি' ব্যক্তি, যে সব মতামতের দলীল ভালোমতো পর্যালোচনা করার যোগ্যতা রাখে না, তবে কোনো একটি মতের দলীল জানতে পারে, তাহলে তাকে সেই দলীলযুক্ত একটি মতই গ্রহণ করতে হবে।
অপরপক্ষে 'আম্মী লোক, যার পক্ষে গবেষণা ও পর্যালোচনা করা সম্ভব নয়, তাকে তার মুফতীর মতই মানতে হবে।
জেনে রাখুন! মাঝে মাঝে আলেম মুজতাহিদ ব্যক্তিকেও এমন সব মাসয়ালাতে তাকলীদের দ্বারস্থ হতে হয়, যেগুলোর দলীল তার কাছে অস্পষ্ট অথবা ঐ সময় বিস্তর গবেষণার সুযোগ নেই তার কাছে। অনুরূপভাবে মুত্তাবি' ব্যক্তির অবস্থাও তাই।
আলেমগণ মূলত নিম্নোক্ত পরিস্থিতিগুলোতে তাকলীদকে নিন্দা করেছেনঃ
১) যার গবেষণা ও পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও করছে না।
২) আবশ্যকীয় দলীল স্পষ্ট হওয়ার পরেও যে তাকলীদ করে।
৩) গোঁড়ামি ও অন্যদের তিরস্কারের দিকে এই তাকলীদ যদি ঠেলে দেয়। উদাহরণত, অন্যদেরকে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা মাযহাবের তাকলীদ আবশ্যকীয়ভাবে করতে বলে।
তবে এমনিতেই তাকলীদ মূলত 'আম্মী লোকদের জন্য।
আবার অন্যদের জন্যও বৈধ রয়েছে, উপরে যেমন আলোচনা করা হয়েছে।
আল্লাহই তাওফীকদাতা।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
🌷অতি সংক্ষেপে তাকফীর করার কিছু মূলনীতিঃ
১) কাউকে কাফের বলা একমাত্র আল্লাহ ও তদ্বীয় রাসূলের অধিকার। আল্লাহ ও রাসূলের থেকে আগ বাড়িয়ে কিছু বলা জায়েয নয়।
২) কুফরী দুই প্রকার:
ক. ছোট কুফরী, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয় না।
খ. বড় কুফরী, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয়। এই ধরনের ব্যক্তি দ্বীন বর্জনকারী, জামা'আতকে বিচ্ছিন্নকারী। সে মুরতাদ।
৩) ইয়াকীন তথা নিশ্চিতভাবে যার ইসলাম প্রমাণিত, অনুরূপ নিশ্চিত বিষয় ছাড়া তাকে কাফের বলা যাবে না।
৪) কোনো ধরনকে কুফরী বলা আর ব্যক্তিকে কাফের বলার মাঝে পার্থক্য করতে হবে।
৫) নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কাফের বলতে চাইলে তার আগে অবশ্যই হুজ্জত কায়েম করতে হবে।
৬) কোনো কথা বা কাজকে কুফরী বললেই তার কথক বা সম্পাদনকারীকে কাফের বলা যায় না। কারণ ব্যক্তিকে কাফের বলতে গিয়ে দেখা গেল যে, কোনো একটা প্রতিবন্ধক আছে! ফলে আর কাফের বলা যায় না।
৭) শুধু কথার মাধ্যমেও কুফরী হতে পারে; যেমন: আল্লাহ বা রাসূলকে গালি দেওয়া, অথবা আল্লাহ ও রাসূলকে নিয়ে বা দ্বীন নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা।
৮) মানুষের উপর হুকুম লাগানোর ক্ষেত্রে মূলনীতি হলো: বাহ্যিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে হুকুম লাগাতে হবে। আর গোপন বিষয় একমাত্র আল্লাহই জানেন।
৯) উদ্দিষ্ট কুফরী বিষয়টি যদি কুফরী ও অন্য কিছুর সম্ভাবনা রাখে, তাহলে একদম সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কুফরী বলে রায় দেওয়া যাবে না। আর যদি বিষয়টি কুফরী ছাড়া অন্য কিছুর সম্ভাবনা না রাখে, তবে প্রতিবন্ধকতা দূর এবং শর্ত পূরণ হওয়ার পরেই কেবল ব্যক্তিকে কাফের বলা যাবে।
১০) মুসলিমদের কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্টভাবে কাফের বলতে গেলে অবশ্যই হুজ্জত কায়েম করতে হবে, শর্ত পূরণ হতে হবে এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
১১) কাবীরা গুনাহ হলেও কোনো ধরনের পাপের কারণে কাউকে তাকফীর করা যাবে না, যতক্ষণ না সে এই পাপকে হালাল মনে করে।
১২) হালাল মনে করার বিষয়টি মানুষের বিশ্বাস ও অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত।
এর মূলনীতি হলো: ব্যক্তি জানবে যে, আল্লাহ এই বিষয়কে হারাম করেছেন; কিন্তু এরপরও সে এটাকে হালাল বলে বিশ্বাস করে।
তবে আমলগত হালাল থেকে কোনো মুমিনই মুক্ত নয়। (কারণ কোনো পাপের কাজ করলেই তো সেটা আমলগতভাবে হালাল করা হলো!!)
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
বিস্তারিত দলীল সহ জানতে শায়খের "তাকফীর ওয়া যওয়াবিতুহু" গ্রন্থটি দেখুন।
আমাদের শ্রদ্ধেয় সদস্যদের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে ঈদ সেলামি...
Читать полностью…"কিছু মানুষ বলে, আমরা দরিদ্রদের এক সা খাবার দিলে তারা তা বিক্রি করে দেয়, এটা একদম নিজ চোখে দেখা। তারা এর অর্ধেকের চেয়েও কম দামে বা একটু বেশি দামে বিক্রি করে।
আমরা তাদের উত্তরে বলব: আমাদের তো ফকিরের হিসেব দিতে হবে না। আমরা শুধু আদিষ্ট বিষয় পালন করব এবং বলব: শুনলাম ও মানলাম, খাদ্য দেব।
এরপর দরিদ্র ব্যক্তি যা ইচ্ছা তাই করুক, চাইলে খাবে না চাইলে খাবে না, চাইলে জমা করে রাখবে না চাইলে বিক্রি করে দেবে, চাইলে উপহার দেবে কাউকে আবার চাইলে নিজের পক্ষ থেকে সদকা করবে!
এগুলোর কোনো হিসেবই আমাদের উপর বর্তায় না। আমাদের যেটা দায়িত্ব সেটা হলো: এক সা পরিমাণ খাদ্য বস্তু দেওয়া।"
✍️ইমাম ইবনে উসায়মীন রহিমাহুমাল্লাহ।
"...আশা করছি, এই বিষয়গুলো যদি কেউ বোঝে, তাহলে এ সম্পর্কে ইনশাআল্লাহ তার মাঝে কোনো ত্রুটি আসবে না।..."
✍️শায়খ সুলায়মান আর-রুহায়লী হাফিযাহুল্লাহ।
(আসছে ইনশাআল্লাহ)
"আপনাদের এই মাসের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলো। তো যে ভালো কাজ করেছে, সে যেন আরো বেশি বেশি করে। আর যে খারাপ করেছে, সে যেন এসব থেকে বিরত থেকে ভালো কাজের চেষ্টা করে।
কারণ আপনাদের দিনগুলোই আপনাদের আমলের মূল সময়। এখন যেগুলো সঞ্চয় করবেন, আখিরাতে সেটাই বের করা হবে।
আপনারাও দেখুন কি জমা করছেন! কারণ দুনিয়া থেকে অচিরেই আপনারা চলে যাবেন।"
✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
"রোজাদার ব্যক্তির জন্য সারাদিনই বেশি বেশি দোয়া করা শরীয়তসম্মত। কারণ রাসূল ﷺ বলেছেনঃ"তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না" তন্মধ্যে একজন হলো, "ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের দোয়া"।-তিরমিযী, ইবনু মাজাহ।
ইফতারের কিছুক্ষণ আগে দোয়া কবুল হয়, কিছু মানুষের এইরকম নির্দিষ্টকরণ সঠিক নয়। রোজাদারের জন্য সারাদিন যেমন দোয়ার সময়, অনুরূপভাবে ইফতারের সময়ও দোয়ার সময়।
✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
"কিছু লোক "আল্লাহর হুকুমের" নাম করে নিজেদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী মুসলিম দেশের উপর হামলে পড়ে, অথচ (তাদের উক্ত দাবিতে) ওরা মিথ্যাবাদী।
বিপরীতে কিছু লোক আবার দেশের ভালোবাসা ও প্রতিরোধের নামে নিজেদেরকে আড়ালে রাখে, অথচ ওরা চোর!
প্রথম শ্রেণি মিথ্যাবাদী (কৃতজ্ঞতা) অস্বীকারকারী। আর দ্বিতীয় শ্রেণি অভিশপ্ত চোর। দুই দলের লোক সংখ্যা অনেক।
বিশ্বস্ত আমানতদার ও সত্যপন্থীরা কতইনা সংখ্যালঘু!!
✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
"নিজে নিজে শায়খ হওয়ার প্রতিযোগিতা এবং অন্যকে শায়খ বানানোর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটিয়েছে, যারা উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করছে: ইলমহীনতা বা আকলহীনতা বা সততা অথবা (তাদের মাঝে) সবগুলোরই সমন্বয় হওয়ার কারণে!
অতএব আপনারা চেহারা সুরত ও টাইটেল দেখে প্রতারিত হবেন না। বরং যিনি সততার সাথে দ্বীনদার, (যার কথায়) ইলমের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এমন এবং পূর্ণ জ্ঞানবান বলে পরিচিত তাদের কাছ থেকেই ইলম অর্জন করুন।"
✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
🚦 দৃষ্টি আকর্ষণ!
বাবা মা দু'জনই আছেন বা একজন আছেন এমন ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ!
নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: তাদের সেবায় নিজেকে কতটুকু নিয়োজিত রাখতে পেরেছেন?
তাদের সেবা করার ক্ষেত্রে কি আপনি আলাদা কোনো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পেরেছেন?
সহীহ মুসলিমের (হা/২৫৫১) হাদীসটি স্মরণ করুন!
আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ নাক ধূলিমলিন হোক, নাক ধূলিমলিন হোক, নাক ধূলিমলিন হোক।
জিজ্ঞেস করা হল, কোন ব্যক্তির, হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ "যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে বার্ধক্যাবস্থায় পেল অথচ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না।"
আপনার পিতা-মাতার সেবার এ সুযোগটা হাতছাড়া করবেন না।
আমার উপদেশ শুনুন, আমি আপনার একান্তই হিতাকাঙ্খী।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
#পরিত্যক্ত_সুন্নাহ-০১
প্রশ্নঃ "পরিত্যক্ত সুন্নাহ" বোঝার মূলনীতি কি? বর্ণিত যেসব হাদীসে লোকজনের আমল নেই, সেগুলোকে কি আমরা পরিত্যক্ত সুন্নাহ হিসেবে গণ্য করব?
উত্তরঃ পরিত্যক্ত সুন্নাহ হলো, রাসূল ﷺ যেগুলো ইবাদত হিসেবে করতেন, কিন্তু মানুষেরা সেটা আমল করে না; সেটাই পরিত্যক্ত সুন্নাহ।
অতএব:
•যার সনদ প্রমাণিত নয়, সেটা সুন্নাহ নয়।
•সনদ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও সালাফগণ যেটার আমল করা থেকে বিরত থেকেছেন, সেটা সুন্নাহ নয়।
•সনদ প্রমাণিত, কিন্তু রাসূল ﷺ তা ইবাদত হিসেবে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য করেননি, সেটাও সুন্নাহ নয়।
•রাসূল ﷺ ইবাদত হিসেবে করেছেন এবং লোকজনও তা পরিত্যাগ করেনি, সেটা পরিত্যক্ত সুন্নাহ নয়।
রাসূল ﷺ থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত হওয়াটাই পরিত্যক্ত সুন্নাহর মানদন্ড নয়, যতক্ষণ না তা "ইবাদত হিসেবে করেছেন" বলে প্রমাণিত হয়।
কিছু মানুষ এই ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে থাকে। কোনো বিষয়ে একটা সহীহ হাদীস পেলো এবং লোকদের মাঝে সেটার পরিচিতি দেখতে পেল না, অমনি তারা সেটাকে পরিত্যক্ত সুন্নাহ বলে থাকেন।
রাসূল ﷺ মানবিক চাহিদার ভিত্তিতে কোনটা করলেন, যেটাতে ইবাদতের উদ্দেশ্য ছিল না, আর সালাফগণ কোনটার আমল ছেড়েছেন- এগুলো কোনোটার মাঝেই তার কাছে কোনো পার্থক্য নেই। বরং এমনো দেখতে পাবেন যে, এই হাদীসটা মানসূখ হতে পারে বা মুতাশাবিহ হতে পারে বা মুখাসসাস তথা নির্দিষ্ট হতে পারে অথবা আরো অন্যান্য এরকম অনেক কিছুই হতে পারে- এই বিষয়টা তারা বেমালুম ভুলে যায়!
এজন্যই আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, কোনো মুসলিম যেন কোনো বিশুদ্ধ হাদীস পাওয়ার সাথে সাথেই সেটাকে পরিত্যক্ত সুন্নাহ দাবি করে না বসে।
আল্লাহ তাওফীক দিন।
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
🚦 আরাফার দিন কোনটি?
বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু 'আলা রসূলিল্লাহ, আম্মা বা'দ:
আরাফার দিন ঠিক কোনটি- এই বিষয়ে আলেমদের মাঝে বেশ মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও মতভেদ দেখা যায়, তবে বঙ্গে এটা নিয়ে বেশ কড়াকড়ির একটি মাত্রা পরিলক্ষিত হয়। আমাদের অল্পবিস্তর পড়াশোনায় ইমাম ইবনু উসায়মীনের মতামতটি প্রাধান্যযোগ্য মনে হয়, পাশাপাশি বর্তমান যুগের অন্যতম সেরা আলেম শায়খ ফাওযানের বক্তব্যটিও আমরা এখানে উল্লেখ করব। সর্বশেষ নিজেদের পক্ষ থেকে একটু ফুটনোট উল্লেখ করে ইতি টানব ইনশাআল্লাহ।
🌹শায়খ ফাওযানের মতামত
প্রশ্নঃ যুল হিজ্জাহর চাঁদ দেখা ও আরাফায় অবস্থান করার ক্ষেত্রে কি চন্দ্রোদয়ের ভিন্নতার বিষয়টা দেখতে হবে?
উত্তরঃ হ্যা, একইভাবে আরাফার সিয়ামের ক্ষেত্রেও একই বিধান। আরাফায় অবস্থানের ক্ষেত্রে তো আর সৌদি আরবের চাঁদের সাথে ভিন্নতা নাই, কারণ হাজীরা তো সৌদির চাঁদেরই অনুসারী এক্ষেত্রে। সৌদির চাঁদ দেখলেই তারা সে অনুযায়ী মুসলিমদের সাথে আরাফার ময়দানে অবস্থান করবে।
কিন্তু আপনার প্রশ্নের উদ্দেশ্য যদি হয় যে, অন্য অঞ্চলে থাকা লোকেরা কি সৌদির চাঁদ দেখা অনুযায়ী সিয়াম রাখবে? এর উত্তরে আমরা বলিঃ "তাদের নিজেদের চাঁদ দেখা অনুযায়ী তারা পালন করবে।"
🎙️শায়খ সালেহ আল-ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ।
https://youtu.be/uEVjtXNgpfg
🌹ইমাম ইবনু উসায়মীনের মতামত
প্রশ্নঃ বিভিন্ন অঞ্চলে চন্দ্রোদয়ের ভিন্নতার ফলে আরাফার দিন ভিন্ন ভিন্ন হলে আমরা কি নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী সিয়াম রাখব নাকি হারামাইনের চাঁদ অনুযায়ী?
উত্তরঃ এটা মূলত "পুরো বিশ্বব্যাপী চাঁদের উদয়স্থল একই নাকি আলাদা?" এই মতভেদের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সঠিক কথা হলো: চাঁদের উদয়স্থল ভিন্ন ভিন্ন। মনে করুন, সৌদিতে চাঁদ দেখা গেছে আগে এবং আজ নয় তারিখ। অন্য একটি দেশে মক্কার একদিন আগে চাঁদ দেখা গেছে, তো আমাদের আরাফার দিন তাদের দশ তারিখ। তাদের জন্য তো এই দিন রোজা রাখা জায়েয নাই, কারণ এটা তো তাদের ঈদের দিন।
একইভাবে যদি কোনো দেশে মক্কার একদিন পর চাঁদ দেখা যায় তবে সেই দেশে মক্কার নয় তারিখ মানে তাদের আট তারিখ। তারা তাদের দেশের নয় তারিখ অনুযায়ী সিয়াম রাখবে,যেদিন মক্কায় দশ তারিখ হবে।
এটাই হলো প্রধান্যযোগ্য কথা। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "তোমরা চাঁদ দেখে রোজা ধরো এবং চাঁদ দেখে ছাড়ো।" আর যাদের দেশে চাঁদ ওঠেনি তারা তো তা দেখতেই পায়নি।
যেমনভাবে মানুষ নিজ নিজ এলাকায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত নিজেদের মতো হিসেব করে, -আর এটা তো সবার ঐক্যবদ্ধ (ইজমা) মত-, একইভাবে মাসিক হিসেবটাও দৈনন্দিন হিসেবের মতো হবে।
✍️ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসায়মীন রহিমাহুল্লাহ।
📚 মাজমূ' ফতোয়া, ২০ তম খন্ড, সিয়াম অধ্যায়।
নোটঃ উপরে ইমাম ইবনু উসায়মীনের বক্তব্য থেকে একটি বিষয় ফুটে ওঠে। যারা মক্কার একদিন আগে চাঁদ দেখে তারা কি তবে ঈদের দিন রাখবে? যদি রাখে তাহলে হাদীসের বিরোধিতা হলো, আর যদি না রাখে তাহলে আজীবনের জন্য তারা এই মহান ফজিলত থেকে মাহরুম! ইসলাম কি এতোটা সঙ্কীর্ণতা দিয়েছে?
আরেকটি বিষয় এখানে লক্ষণীয়। আরবী ভাষায় বিভিন্ন ঘটনা বা অবস্থান বা প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে দিনের নামকরণ করা হয়ে থাকে, শুধু দিন নয়, বরং মাস বা বছরেরও নামকরণ হয়ে থাকে। যেমন রাসূলের জন্ম তারিখের আলোচনায় আমরা "আমুল ফীল" বা হস্তিবর্ষের লেখা দেখতে পাই। প্রতি আরবী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীয বলা হয়। অন্য তারিখকে কিন্তু এটা বলা যাবে না। অনুরূপভাবে হজের আলোচনায় আমরা ধারাবাহিক ভাবে কি কি কাজ করতে হয়, এই আলোচনা পড়তে গেলে দেখব যে, আট তারিখকে ইয়াওমুত তারবিয়া (يوم التروية ) বলা হয়, নয় তারিখকে ইয়াওমু আরাফাহ বলা হয়েছে। সেদিন হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন বিধায় এই নাম এসেছে। কিন্তু ফিকহের বইগুলোতে আরাফার দিনের পরিচয়ের জায়গায় আবার যুল হিজ্জাহ মাসের নয় তারিখ লেখা আছে।
এছাড়াও যদি আরাফার দিনকে আমরা মক্কার সাথে খাস তথ নির্দিষ্ট করে দিই, তাহলে তাকবীরে মুকায়্যাদ কবে থেকে শুরু হবে- সেটা নিয়েও ঝামেলা তৈরি হবে।
সাবধানতা বশতঃ দুইদিন সিয়াম রাখার কথা বলা হলেও একটি দিনের সিয়াম দুইদিন একই নিয়তে রাখা বিদ'আত হবে কিনা সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। যদি কোনো ব্যক্তি জোহরের নামাজ পড়ার পরেও আসরের সময় "জোহরের নামাজ কবুল হলো কি হলো না?" এই আশঙ্কায় আবার আসরের সাথেও জোহরের নিয়ত করে সেটা অবশ্যই সুন্নাহ বিরোধী আমল হবে।
আল্লাহই ভালো জানেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদেরকে ইসলামের নিষ্কলুষ জ্ঞান দান করুন, আমলটুকু কবুল করুন। আমীন।
সঙ্কলনেঃ ইয়াকুব বিন আবুল কালাম
ওহে ছাত্র ভাইয়েরা!
মাতৃভূমি তোমাদেরকে দিয়ে এমন একটা প্রজন্ম গড়াতে চাচ্ছে, যারা মজবুত বন্ধনে, দৃঢ় মননে, মতাদর্শের চেতনে, গভীর জ্ঞানে এবং পারস্পরিক সহাবস্থানে অটুট থাকবে। দেশে মতাদর্শের এই বিশৃঙ্খলা তারা রুখবে, আমলহীন বেকারত্ব তাড়াবে, চিন্তাগত জড়তা বিদূরণে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি মানব জীবনে জেঁকে বসা অস্থিরতা দূরীকরণ এবং গুরুত্বহীন বিষয়ে গতানুগতিক ধাঁচের বিরোধ থেকে বিরত থাকবে।
কিন্তু তোমরা যদি রকমারি প্রবৃত্তির স্রোতে চলো, (শরীয়তের সাথে) অসঙ্গতিপূর্ণ কথায় নাচতে থাকো; তবে তো দেশের পুরো প্রজন্মকেই ধ্বংস করে দিলে, তোমরা নিজেরাও এই দেশের জন্য সমস্যা ও ঝামেলার ভার বাড়িয়ে দিলে। সর্বোপরি চিকিৎসার দেরী হওয়ায় অসুস্থতার সময়টাও দীর্ঘ করে দিলে!
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বুশায়র ইবরাহিমী রহিমাহুল্লাহ।
📚আল-আসার, ৩/২০১।
মানুষকে দারিদ্রতার ভয় দেখাবেন না...
বরং মানুষকে দারিদ্রতা আনয়নকারী পাপ থেকে সতর্ক করুন।
কারণ পাপের কারণেই তো বিপদ আসে, আর তাওবার মাধ্যমে তা দূরীভূত হয়।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ "আর তারা যদি হকের উপর অবিচল থাকত, তবে অবশ্যই তাদেরকে আমরা প্রচুর বারি বর্ষণে সিক্ত করতাম।" -[সূরা জিন, ১৬]
ঘুমাই, জাগ্রত হই, মোবাইল আমাদের হাতেই থাকে! বিবেক হারিয়ে গেছে, মেধা ভ্রষ্ট হয়েছে!
কুরআন তিলাওয়াত নাই, নাই কোনো জিকির আজকার, নফল ইবাদত নেই, দোয়া নেই, তাওবা নেই!
হে আল্লাহ! আমাদের অবস্থার প্রতি রহম করুন, আমাদের অন্তরগুলো পরিশুদ্ধ করে দিন, আপনার পানে ফিরে নিয়ে যান কোনোরূপ সমস্যা ও বিভ্রান্তিকর ফিতনায় পতিত হওয়া ছাড়াই। আমীন...
✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।
"বড়দের ভুল ধরা ছোটদের জন্য খুবই সহজ, কিন্তু বড়রা কখনোই বড়দের ভুল ধরেন না।
সুবহানাল্লাহ, আমি এরকম অনেক খবরই জানি। বড়দের কথাকে ভুলভাবে বোঝা বড়দের পক্ষে সম্ভব নয়।
আমি একবার আমাদের শায়খ আহমাদ আন-নাজমী রহিমাহুল্লাহর কাছে ছিলাম। তখন কারী ইবনু উসায়মীন রহিমাহুমাল্লাহর একটা কথা পড়ল, যেটা ইবনু উসায়মীন রহিমাহুমাল্লাহর মতো মানুষ বলতেই পারেন না। তখন তিনি বললেন: এটা শায়খ ইবনু উসায়মীনের কথা হতেই পারে না। এই অর্থ তিনি উদ্দেশ্য নেননি। বরং (আসল কথা হলো) প্রকাশকরা ভুল লিখে সেভাবেই প্রকাশ করেছে, পরিমার্জনা ছাড়াই।
আর বাস্তবেই, পরবর্তীতে যখন এই বইয়ের সংস্করণ বের হয়, তখন শায়খের এই কথাকে বাদ দেওয়া হয়।
বড়রা কখনোই অপরজনের ইলমকে হেয় করে এরকম বলতে পারেন না যে, "এটা একটা বাতিল কথা। অমুক যেটা বলেছে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। তার অনেক ভুল আমরা জানি।"
বড়রা কখনোই এটা করেন না, কারণ তারা ইলমের হাকিকত জানেন; তারা বোঝেন যে, আলেমরা সত্যই বলে থাকেন। আলেমরা কখনোই সত্যকে বাদ দিয়ে মিথ্যা প্রচার করার ইচ্ছা করেন না।
আলেম ভুল করতে পারেন, ভুলে যেতে পারেন, কথা অস্পষ্ট হতে পারে; কিন্তু এমতাবস্থায় তার কথাকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে হবে। সরাসরি তার ইলমকে ছোট করা, ভুল বলা, মুর্খতার দিকে নিসবত করা, পথভ্রষ্টকর আখ্যা দেওয়া ইত্যাদি করা ঠিক হবে না।
কেউ যদি বড়দের কথা বুঝতে না পারে, তবে তার জন্য আবশ্যক হলো: সে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করবে, বোঝার চেষ্টা করবে, বারবার পড়বে, আরো খোঁজাখুঁজি করবে; যতক্ষণ না বড় আলেমদের কথা তার বুঝে আসছে।"
🎙️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
পিডিএফ লিঙ্ক:
/channel/MishrefAqidah/41490
"আল্লাহর কসম! যত রূপই ধারন করুক না কেন, খারেজী চিন্তাধারা কোনোদিনই উম্মাহর উপকার করতে পারে না। বৈপ্লবিক চিন্তাধারা লালনকারী এবং এটিকে মানুষের কাছে ভালো করে দেখানোর চেষ্টাকারী ইলমের দাবিদার লোকজন সমাজের কোনো কল্যাণই বয়ে আনতে পারে না।
সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা ছাড়া এবং শাসকদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে এই সমস্ত বিভ্রান্ত চিন্তাধারা থেকে বিরত না হওয়া পর্যন্ত উম্মাহর অবস্থা সংশোধন হবে না। খুরতুমে -আল্লাহ এই শহরকে হেফাজত করুন- চলমান অত্যাচার, লুন্ঠন, মৌলিক অধিকারে জুলুম ইত্যাদি খবর যখন দেখি, তখন শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া রহিমাহুল্লাহর এই কথাটা স্মরণ হয়: "বলা হয়ে থাকে, ষাট বছর জালেম শাসকের অধীনে থাকা শাসকহীন এক রাত থাকার চেয়ে উত্তম। বাস্তব অভিজ্ঞতা এটাকে সমর্থন করে।"
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা সুদান, সুদানের অধিবাসী সহ সমস্ত মুসলিম দেশকে রক্ষা করুন। ফিতনার অনিষ্টতা ও ফিতনা সৃষ্টিকারীদের খারাবি থেকে আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।"
✍️শায়খ ড. সুলায়মান আর-রুহায়লী হাফিযাহুল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের এবং আপনাদের যাবতীয় সৎ আমলগুলোকে কবুল করে নিন, ভবিষ্যত জীবনকে তাঁরই আনুগত্যে কাটানোর তাওফীক দিন। এই কামনায় "ঈদ মোবারক"...
Читать полностью…এসে গেল বহুল কাঙ্ক্ষিত সেই বইটি, আলহামদুলিল্লাহ। গত বছর ঘোষণা দেওয়া থাকলেও বিভিন্ন ব্যস্ততায় তা হয়ে ওঠেনি।
রমজানের এই শেষ দশকে শরয়ী ইলম অর্জন ও তদনুযায়ী আমল করার তাওফীক আল্লাহর কাছে চাই।
লায়লাতুল কদর অন্বেষণ: স্পষ্টতার কিছু দিক
লায়লাতুল কদর শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিগুলোতে। আর এই বিজোড় রাতের হিসাব:
ক) কখনো মাসকে ২৯ দিন ধরে করা হয়। সে হিসেবে বিজোড় রাতগুলো হলো:
২১ এর রাত,
২৩ এর রাত,
২৫ এর রাত,
২৭ এর রাত এবং
২৯ এর রাত।
খ) আবার কখনো ৩০ দিন ধরে করা হয়। তখন হিসাব হয় শেষের দিক থেকে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বিজোড় রাতগুলো হলো:
নয়দিন বাকি থাকতে যে রাত= ২২ শের রাত,
সাতদিন বাকি থাকতে যে রাত= ২৪ শের রাত,
পাঁচদিন বাকি থাকতে যে রাত= ২৬ শের রাত,
তিনদিন বাকি থাকতে যে রাত= ২৮ শের রাত এবং
একদিন বাকি থাকতে যে রাত= ৩০ শের রাত।
✓ইবনু তায়মিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন: "লায়লাতুল কদর যে রমাযানের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিগুলোতে হয়, সে ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছহীহ হাদীছ রয়েছে।
কিন্তু এই বিজোড় কখনো মাসের প্রথম থেকে হিসাব করা হয়; তখন বিজোড় হলো: ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ এর রাত সমূহ।
আবার কখনো মাসের অবশিষ্ট দিনের হিসেবে হিসাব হয়; যেমন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "নবম দিন বাকি থাকতে, সপ্তম দিন, পঞ্চম দিন, তৃতীয় দিন এবং একদিন বাকি থাকতে যে রাত হয়।"
এ হাদীছের ভিত্তিতে ৩০ দিনের মাসে কদরের রাতগুলো হবে জোড় রাতসমূহ। তো বাইশের রাত হবে নয় দিন বাকি থাকার রাত, চব্বিশের রাত হবে সাতদিন বাকি থাকার রাত।
এভাবেই আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু ছহীহ হাদীছে (ছহীহ মুসলিমে) ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এভাবেই অবস্থান করেছেন।
আর ২৯ দিনের মাসে অতিবাহিত দিন হিসেবে করতে হবে, যেমন বলা হয়েছে।
হিসাবের ব্যাপারটা যখন এরকমই, তখন মুমিন ব্যক্তির উচিত পুরো শেষ দশকেই অন্বেষণ করা। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমরা শেষ দশকে লায়লাতুল কদর তালাশ করো। -(বুখারী ও মুসলিম)"
--মাজমূ' ফতোয়া, ২৫/২৮৪-৮৫।
এর অর্থ হলো, পুরো শেষ দশকেই লায়লাতুল কদরের আশা করা যায়।
(শায়খ محمد بن عمر بازمول হাফিযাহুল্লাহ এর পেজ থেকে অনূদিত) ঈষৎ পরিবর্তিত।
--ইয়াকুব বিন আবুল কালাম
১৯/০৯/১৪৪২ হি:
02/05/2021
উপরোক্ত বইগুলোতে বারংবার নজর বুলানো দরকার...
Читать полностью…রমজান পুরো মাস জুড়েই আল্লাহর রহমতের দরজা খোলা। কিন্তু এই রহমত আমরা পাব কিভাবে? এই উপায়গুলো নিয়েই সংক্ষিপ্ত এই অনুবাদ...
Читать полностью…