❝ আরাফার দিনে জান্নাতকে সবচেয়ে কাছে নিয়ে আসা হয় জাহান্নামকে সবচেয়ে দূরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বঞ্চিত হল সে যে এই দিনে তাকে রক্ষা করবে,এমন কোন আমল পায় না।
তিনি ( সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) বলেছেন,
আরাফার দিনের চেয়ে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বেশি মুক্তি দেন এমন কোন দিন নেই। ❞
- শাইখ আব্দুল আযীয আল তারিফী ফাক্কাল্লাহু আসরহ
#যিলহজ্ব
#Dhul_Hijjah
/channel/AbdulAzizAtTarifi
সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষ হত্যা করা, সুন্নী মুসলিমদের উপরে ম্যাসাকার চালানো, মুসলিম নারীদেরকে দলবেঁধে ধর্ষণের নির্দেশ দেওয়া নুসাইরি বাশার আল-আসাদকে আবার স্বাগত জানানো হলো আরব লীগে।
হে মুসলমানরা! জাজিরাতুল আরব আর তোমাদের নেই। এ আরবে এখন নুসাইরি, আমেরিকান- সবার জায়গা হয়। কিন্তু মুসলমানদের রক্তের আর কোনো মূল্য এখানে নেই।
একজন মুমিনের অন্তর নরম হওয়ার প্রমাণ এই যে, সে অন্য মুমিন ভাইকে হোঁচট খেতে দেখলে এতটাই কষ্ট পাবে যেন সে নিজেই হোঁচট খেয়েছে। কখনোই এতে সে খুশি হবে না।
.
- ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)
[মাদারিজুস সালিকীন: ১/৪৩৬]
أن يتوجع لعثرة أخيه المؤمن إذا عثر ، حتى كأنه هو الذي عثر بها ولا يشمت به ، فهو دليل على رقة قلبه
সায়্যিদুন মূসা আলাইহিস সালাম তূর পাহাড়ে উঠে আল্লাহকে বললেন, ইয়া আল্লাহ! তুমি আমাকে নামাজ পড়ার তাওফিক দিয়েছো, দান সাদাকাহ করতে পেরেছি তোমারই দানে, রিসালাতের আজিমুশ শান দায়িত্বও তো তোমারই দান গো মাওলা। কী করলে তোমার শুকরিয়া আদায় হবে বলো?
আল্লাহ বললেন, এই তো তুমি শুকরিয়া আদায় করেই ফেললে। কিন্তু যে ব্যক্তি রমাদ্বান মাসের নিয়ামতের বদলায় রমাদ্বানের পর গুনাহ করে, তবে তো সে নিয়ামতের বিনিময়ে অকৃতজ্ঞতা করে বসল। যে ব্যক্তি রমাদ্বানের পর আবারো গুনাহ করার ইরাদা রাখে, তার রোযা তার দিকে ছুড়ে মারা হবে। রহমতের দরজা তার মুখের উপর বন্ধ করে দেয়া হবে।
কাআব রহ. বলেন, যে ব্যক্তি রমাদ্বানে এই নিয়তে রোযা রাখে যে, সে যা যা গুনাহ করত তা রমাদ্বান শেষ হলে আর করবে না, তবে সে বিনা হিসাবে জান্নাতে দাখিল হবে। আর যদি মনে মনে এই ভাবে যে, রমাদ্বানটা শেষ হলেই সে নাফরমানিতে লিপ্ত হবে, তবে তার রমাদ্বান প্রত্যাখাত হবে।
-লাত্বাঈফুল মাআরিফ (৩৬-৩৭পৃঃ)
ভাইয়া - আম্মারুল হক
কেন আপনার তওবা করা উচিত? শাইখ আহমাদ মুসা জিবরীল Shaykh Ahmad Musa Jibril || As Salafiyah
https://youtu.be/VSTm130k7CI
"যে এই বিশ্বাস পোষণ করে যে আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তাতে দানা পরিমাণ সংকীর্ণতা (حرج) রয়েছে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ﷺ মিথ্যা প্রতিপন্ন করলো। তাহলে যে ব্যক্তি আল্লাহর কর্তৃক আদিষ্ট কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে মনে করে যে তার মাঝে ফাসাদ (গোলোযোগ) রয়েছে বা ক্ষতি রয়েছে, তাতে কোনো উপকার নেই বা কোনো কল্যাণ(মাসলাহাহ) নেই-তার কী অবস্থা হবে?"
.
~ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ [রাহ.]
.
.
[ জামিউল মাসাইল: ৮/২৫৯, দারু ইবনিল জাওযী]
.
একই বছর নাশকতামূলক কার্যকলাপ, সরকারবিরোধী বক্তব্য ও লেখালেখির অভিযোগে সাইয়্যিদ কুতুবকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক বছর কারাভোগের পর সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়—তিনি যদি সংবাদপত্রের মাধ্যমে ক্ষমার আবেদন করেন, তাহলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। কুতুব প্রত্যাখ্যান করেন এ প্রস্তাব। পরবর্তী সাড়ে ১১ বছর কুতুব কারাগারেই কাটান এবং সে সময়েই তিনি লেখেন তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় রচনাগুলো।
.
বন্দি অবস্থাতেই পুরো আরববিশ্ব জুড়ে কুতুবের রচনা এবং খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৪ সালের মে মাসে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম আরিফের সুপারিশে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে। এবছরই তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা মাআলিম ফিত তরীক প্রকাশিত হয়। এ বই ইসলামি আন্দোলনের চিন্তার জগতে এক বিপ্লব তৈরি করে। ১৯৬৫ সালে আবার যখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে সরকার পতনের চক্রান্তের অভিযোগ আনা হয়, তখন প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় মাআলিম ফিত তরীক বইটি। পরবর্তী সময়ে ইখওয়ান-ও এ বইয়ের সাথে নিজেদের দূরত্বের ঘোষণা দেয়।
.
সামরিক ট্রাইবুনাল সাইয়্যিদ কুতুবের ফাঁসির আদেশ দেয়। দেশবিদেশের বিভিন্ন বরেণ্য ব্যক্তি ও উলামা তাঁর মুক্তির জন্য আবেদন জানায় নাসেরের কাছে। সরকারের পক্ষ থেকে আপসের বিভিন্ন প্রস্তাবও দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু কুতুব তাঁর আদর্শ ও অবস্থান থেকে বিন্দু পরিমাণ সরতে অস্বীকৃতি জানান। তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, ‘সালাতে এক আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেওয়া আঙুল কোনো মিথ্যা ইলাহ-এর শাসনের পক্ষে একটি অক্ষর লিখতেও অস্বীকৃতি জানায়।’
.
সাইয়্যিদ কুতুবের ২৪ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ৩০ টির মতো বই সরকারি বাধার কারণে প্রকাশিত হতে পারেনি। এছাড়া তিনি ৫০০ এর বেশি প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে মাআলিম ফিত তরীক এবং ফী যিলালিল কুরআন।
.
তাঁর ছোট ভাই মুহাম্মাদ কুতুবের বক্তব্য অনুযায়ী, জীবনের শেষ দিকে কুতুব তাঁর প্রথম দিককার বিভিন্ন লেখার অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং ১৯৫৮ থেকে শুরু করে পরবর্তী রচনাগুলোই সাইয়্যিদ কুতুবের সর্বশেষ অবস্থানের প্রতিফলন।
.
১৯৬৬ সালের ২৯ আগস্ট ভোরে সাইয়্যিদ কুতুবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ডের আগে তাঁকে কালিমা পড়াতে একজন আযহারি শাইখকে পাঠানো হয় জেলখানায়। কুতুব তাকে লক্ষ করে বলেন,
.
অবশেষে আপনি এলেন এই নাটকের অবসান ঘটাতে? মনে রাখবেন, আমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর কালিমাকে বিজয়ী করতে চাচ্ছি বলে আমাদের ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে। আর আপনারা এই কালিমা বিক্রি করে খাচ্ছেন। শুনে নিন, আমি বলছি—আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
.
উত্তর-উপনিবেশিক ইসলামি আন্দোলনের ওপর সাইয়্যিদ কুতুবের প্রভাব ব্যাপক ও বিস্তৃত। পরবর্তী প্রায় সকল ইসলামি আন্দোলন তাঁর চিন্তাধারা দ্বারা কোনো না কোনো মাত্রায় প্রভাবিত হয়েছে। সেক্যুলার মডার্নিটি এবং প্রকৃত ইসলামি জীবনব্যবস্থার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ আল্লাহর ইচ্ছায় মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হয়ে থাকবে।
তথ্যসূত্র : Sayyid Qutb : Between Reform and Revolution, Thameem Ushama
Vaiya - Asif Adnan
কুরআন পুড়ানোর প্রতিবাদ করা অবশ্যই প্রশংসনীয়, কিন্তু এই উম্মাহর জীবন থেকে শরীয়াহ ও কুরআনের শিক্ষা ও প্রয়োগকে পুড়িয়ে বিদায় করাটা অনস্বীকার্যভাবে আরও বেশি প্রতিবাদের দাবি রাখে।
~ শাইখ আহমেদ মূসা জিবরিল حفظه الله تعالى
নিউ ইয়ারস/থার্টি ফার্স্ট উৎসবের ব্যাপারে সচেতনতামূলক লিফলেট-
উৎসবের আড়ালে।
আগ্রহীরা লিফলেটটি ছাপিয়ে নিজ নিজ এলাকায়/মাসজিদের সামনে বিলি করতে পারেন। ইসলামকে সামাজিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য এধরণের কাজগুলোতে তরুণদের এগিয়ে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লিফলেটের গুগল ড্রাইভ লিংক-
https://tinyurl.com/newyearLM
তুরস্কের এক ছেলে যার নাম আলী বোলাত এর ভিডিও চরম ভাইরাল হয়েছে দুইদিন থেকে। সেখানে আলী বোলাত তাওহিদুল হাকিমিয়্যাত সম্পর্কে কথা বলছিলো। সে কোরআনের আয়াত দিয়ে এক সাংবাদিককে বুঝিয়ে দিচ্ছিলো যে এই “সৃষ্টি যার আইন চলবে তার” এবং “আল্লাহ্ হলেন একমাত্র বিধানদাতা”।
কেউ যদি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানবরচিত বিধান দ্বারা ফয়সালা করে তাহলে সে কাফির। এই কথা আলী বোলাত সূরা আল মায়েদার ৪৪ নং আয়াত এর আলোকে ব্যাখ্যা করে।
এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আলী বোলাতকে তাগুত এরদোগান সরকার তাদের হেফাজতে নিয়ে গিয়েছে। শুধু তাকে নিয়ে ক্ষ্যন্ত হয় নি, সাথে তার পরিবারকেও হেফাজতে নিয়ে গেছে। তার বাবাকে হেফাজতে নিয়েছে কারণ তিনি নাকি “তাকফিরি”।
আল্লাহপাক আলী বোলাতের মতো আমাদেরকেও সত্যের পথিক হবার তাওফিক দান করুক এবং তাকে দৃঢ়পদ থাকার তাওফিক দান করুক,তাকে সহো তার পরিবারের সবাইকে হেফাজত করুক।
©As Salafiyah
“ হাজারটা অন্তরে আবেগী জজবা তৈরি না করে একটি অন্তরকে পরিশুদ্ধ করা ভালো।
অন্তর অবিচল থাকে, আবেগ মরে যায়।
হাজারটা দোদুল্যমান কর্মীর চেয়ে একজন দৃঢ়পদ কর্মীই উত্তম। ”
— শাইখ আব্দুল আযীয আল তারিফী ফাক্কাল্লাহু আসরহ
/channel/AbdulAzizAtTarifi
তুর্কী প্রশ্ন, বিশুদ্ধতাবাদ ও ছাত্রনেতৃত্ব(তালেবান)
.
১। সেক্যুলার শাসন কুফর। আল্লাহর আইনের বদলে অন্য আইন প্রণয়ণ, এর দ্বারা শাসন এবং মানুষকে এ আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য করার মতো একাধিক কুফর আকবরের সংমিশ্রন এখানে ঘটে। এধরণের কাজ যে করে সে তাগুতে পরিণত হয়। এ বিষয়টি স্পষ্ট।
.
২। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইসলাম কায়েম— একটা অত্যন্ত বিপজ্জনক ডিলিউশান। এটি শুধু পদ্ধতিগতভাবে ভুল না বরং প্রক্রিয়া হিসেবে অত্যন্ত বিষাক্ত। মুসলিমের একাধিক প্রজন্ম এ পথে চলতে গিয়ে বিচ্যুত হয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের মনে গণতন্ত্রের বৈধতা তৈরিতে সফল এবং ইসলামী শাসন কায়েমের পথে পুরোপুরি ব্যার্থ হয়েছে।
.
৩। সেক্যুলার শাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ সত্তেও ইখওয়ানুল মুসলিমীন এবং জামাআতের মতো দলগুলোকে ওজর দেয়ার সুযোগ থাকে, কারণ তারা ভুল তাউয়ীলের ভিত্তিতে ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম কায়েমের কথা বলে। কিন্তু তুর্কী প্রেসিডেন্টের মতো কেউ যদি সরাসরি বলে, আমরা শরীয়াহ চাই না, সেক্যুলার শাসন চাই - তাহলে সেখানে ওজর দেয়ার সুযোগ থাকে না।
.
অনেকে বলেন, তার মুখে এই কথা কিন্তু অন্তরে অন্য কথা। এধরণের কথার জবাব হল, অন্তরে কী আছে, আমরা জানি না। শরীয়াহও মানুষের বুক চিরে ভেতরে কী আছে তা দেখার নির্দেশ দেয় না। কেউ অন্তরের খবর জানবার দাবি করলে সেটা ভিন্ন আলাপ।
.
৪। এরদোগান প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকা সার্বিকভাবে সমগ্র উম্মাহর জন্য ভালো, কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভালো-এটা একটা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। এটি ক্বাতই বিষয় না, নুসুস দ্বারা প্রমানিত প্রশ্নাতীত কিছু না। এখানে ভিন্নমত থাকতে পারে।
.
কেউ বলতে পারে: এরদোগানের ক্ষমতায় টিকে থাকা মরীচিকার পেছনে ছুটে চলার কালকে প্রলম্বিত করে। এই যুক্তি অনুযায়ী মাসলাহাতের ভিন্ন কোন হিসেব এনে সে বলতে পারে এরদোগান ক্ষমতায় না থাকাই উত্তম।
.
এটাও ক্বাতই না। মাসলাহাতের, বিশেষ করে রাজনৈতিক মাসলাহাতের বেশিরভাগ অবস্থানই এমন। এখানে ভিন্নমতের যথেষ্ট সুযোগ আছে।
.
.
ওপরের ১, ২ ও ৩ স্পষ্ট করার পর মাসলাহার হিসেবনিকেশের আলোকে কেউ তুর্কি বাস্তবতায় এরদোগানের বিজয় কামনা করতে পারেন। একে কোনভাবে তাগুতের পক্ষাবলম্বন বলা যায় না। গণতন্ত্র বা সেক্যুলারিসমের সমর্থকও বলা যায় না।
.
আবার কেউ এই মাসলাহাতের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে, এরদোগানের পরাজয় কামনা করলেও সেটাকেও ‘ইসলামের বিরোধিতা’ কিংবা অতি বিশুদ্ধতাবাদ বলা যায় না।
.
কিন্তু বাস্তবতা হল আমাদের দেশে এভাবে সুক্ষ ভারসাম্য বজায় রেখে কথা বলার মতো মানুষ হাতেগোণা। আমাদের এখানে ঢালাওভাবে এরদোগানকে ‘সুলতান’ এবং ‘অনুসরণীয় ব্যক্তি’ হিসেবে প্রচার করা হয়। সে যেন মুসলিম উম্মাহর বিজয়ী প্রতীক টাইপের কিছু একটা। এই অতিরঞ্জনকারীদের সংখ্যাই বেশি।
.
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হল আলেম, দা’ঈ, তালিবুল ইলম ও খতীবদের বিশাল একটা অংশকে এমন অবস্থান গ্রহণ করতে দেখা যায়। সেক্যুলার শাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে এধরণের অবস্থান ভয়াবহ রকমের ক্ষতিকর। তাই যে কোন বিচারে বুঝমানদের এ দিকটি নিয়েই বেশি সোচ্চার হওয়া দরকার।
.
সবশেষে ছাত্রদের অবস্থানের বিষয়ে কিছু কথা –
ক) ছাত্ররা প্রথম ক্ষমতায় আসে ৯৬ সালে। সেবছর তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হন নাজিমুদ্দীন এরবাকান। ছাত্রনেতা উমারের পক্ষে থেকে এরবাকানকে তুরস্কের ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী’ সম্বোধন করে অভিনন্দন জানানো হয়। উল্লেখ্য তুরস্ক কখনোই ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র’ ছিল না।
.
খ) ছাত্র ১.০ আর ২.০ এর আলাপ যারা তোলেন তারা এ বিষয়গুলো এড়িয়ে যান। বাস্তবতা হল রাওয়াফিদ, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান এবং আরব দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান, জাতিসঙ্ঘের সদস্যপদ, ‘অমুকতমুক কাজে এ ভূখন্ডের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না’ - ইত্যাদি বিষয়ে ছাত্রদের বর্তমান অবস্থান আর ৯৬ এর দিকের অবস্থানের মধ্যে কাগজেকলমে তেমন একটা পার্থক্য নেই।
.
যারা ১.০/২.০ এর কথা বলেন তারা হয় এ বিষয়গুলো জানেন না, অথবা জেনে গোপন করেন। নিজ অবস্থানে সৎ হলে তাদের উচিত ৯৬ থেকেই তাকফিরের সিলসিলা শুরু করা।
.
গ) ছাত্ররা শরীয়াহর দলীল না। কোন আন্দোলন, কোন দল, সংগঠন, ঘরানা কিংবা ব্যক্তিবর্গ শরীয়াহর দলীল না। তাঁরা যতোই সম্মানিত হন না কেন, তাঁদের যতোই অবদান থাকুন না কেন। শরীয়াহ মাপকাঠিতে সবার মূল্যায়ন হবে, কাউকে দিয়ে শরীয়াহ মাপা হবে না।
.
ছাত্রদের অনেক অবস্থানের সমালোচনা ৯৬ এর সময়েও করা হয়েছিল এখনও করা হয়। আবার সমালোচনা করেও শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার প্রকল্পে তাঁদের সহগামী হওয়া যায়। এবং এটাই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান।
-ভাইয়া আসিফ আদনান
মানবাত্মা যখন ‘দয়া’ নামক গুণ থেকে বিচ্যুত হয়, তখন সেই বিচ্যুতিটা হয় নিষ্ঠুরতার দিকে, নতুবা অন্তরের দুর্বলতা বা কাপুরুষতার দিকে। যেমন কাউকে দেখা যায় সে পশু যবাই করে না, হদ্দ কায়েম করে না আর সন্তানকেও শাসন করে না। সে দাবি করে ‘দয়া’র কারণে সে এমনটা করতে পারছে না।
অথচ সৃষ্টিকূলের মাঝে সবচেয়ে দয়ালু সৃষ্টি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে তেষট্টিটি উট যবাই করেছেন, নারী-পুরুষের হাত কেটেছেন, গলা কেটেছেন, হদ্দ কায়েম করেছেন এবং একজন মানুষ নিহত না হওয়া পর্যন্ত পাথর নিক্ষেপ করেছেন। আবার তিনিই ছিলেন আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে সবচেয়ে দয়াপরবশ ও স্নেহপরায়ণ।
.
- ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)
[মাদারিজুস সালিকীন]
وإذا انحرفت عن خلق الرحمة انحرفت: إما إلى قسوة، وإما إلى ضعف قلب وجبن نفس، كمن لا يقدم على ذبح شاة، ولا إقامة حد، وتأديب ولد. ويزعم أن الرحمة تحمله على ذلك. وقد ذبح أرحم الخلق صلى الله عليه وسلم بيده في موضع واحد ثلاثا وستين بدنة. وقطع الأيدي من الرجال والنساء. وضرب الأعناق. وأقام الحدود ورجم بالحجارة حتى مات المرجوم. وكان أرحم خلق الله على الإطلاق وأرأفهم.
Collected from Vaiya -
@abdullahbdarabic
"যে এটা অনুভব করে যে তার কথা-কাজ, অবস্থা ও রিযকের সংকীর্ণতা রয়েছে, বা যে তার আত্মিক অবস্থার পরিবর্তন চায়, তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে সে তাওহীদ ও ইস্তিগফারকে আঁকড়ে ধরবে। কেননা এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে শিফা বা আরোগ্য।"
.
~ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ [রাহ.]
.
.
[ মাজমুঊল ফাতাওয়া: ১১/৬৯৮]
"রাসূলদের মাধ্যমে প্রেরিত আল্লাহর যিকর অন্তরে থাকলে তা শয়তানকে আদম সন্তানের অন্তরে প্রবেশে বাধা দেয়। আর যখন অন্তর যিকরশূন্য হয় তখন শয়তান তার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। যেমনটা আল্লাহ তাআলা বলেন:
.
وَ مَنۡ یَّعۡشُ عَنۡ ذِکۡرِ الرَّحۡمٰنِ نُقَیِّضۡ لَهٗ شَیۡطٰنًا فَهُوَ لَهٗ قَرِیۡنٌ
.
'যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্য শয়তানকে নিয়োজিত করি, অতঃপর সে হয় তার ঘনিষ্ঠ সহচর'[১]"[২]
.
~শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ [রাহ.]
.
.
[ ১) সূরা আয যুখরুফ: ৩৬
২) মাজমুউল ফাতাওয়া: ১০/৩৯৯]
ঈমান ভংগের কারণসমূহ
মুখতাসার শারহু নাওয়াকিদিল ঈমান (সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা সহ ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ)।
আমরা অনেকেই ওযু, স্বলাত, সাওম ভঙ্গের কারণ জানলেও ঈমান ভঙ্গের কারণ জানি না, অথচ এটা তুলনামূলক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেনঃ "অন্ধকার রাতের মত ফিতনা আগমনের পূর্বেই তোমরা নেক আমলের প্রতি অগ্রগামী হও। যে সময় কোনো ব্যক্তি সকাল বেলায় মু’মিন থাকবে এবং রাতে কাফির হয়ে যাবে অথবা সে সন্ধ্যা বেলায় মু’মিন থাকবে এবং সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়াবি স্বার্থের জন্য সে তার দ্বীন বিক্রি করে দিবে।" (সহিহ মুসলিম; কিতাবুল ঈমান: ১১৮)
কোনো ব্যক্তি ঈমান ভঙ্গকারী কোনো বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়লে, সে যদি খাঁটি অন্তরে তাওবাহ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়ে পুনরায় ঈমান নবায়ন না করে, এবং এই অবস্থাতেই মৃত্যু বরণ করে, তাহলে সে কাফির/মুশরিক হিসেবে মৃত্যু বরণ করল, এবং সে কখনোই ক্ষমা পাবে না, কখনোই জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না।
"নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না; আর তার থেকে ছোট যাবতীয় গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন।" [সূরা আন-নিসা ৪; ১১৬]
"নিশ্চয় কেউ আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করলে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যই হারাম করে দিবেন এবং তার আবাস হবে জাহান্নাম।" [আল মাইদাহ: ৫;৭২]
জাহান্নামবাসীরা যখন জান্নাতবাসীদের কাছে খাদ্য ও পানি চাইবে, তখন তারা উত্তরে বলবে, “নিশ্চয় আল্লাহ এ দুটি জিনিস কাফেরদের উপর হারাম করে দিয়েছেন।” [সূরা আল-আরাফ; ৫০]
রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘোষণা করতে বলেছেন যে, “শুধু মুমিন মুসলিমরাই জান্নাতে যাবে।” [মুসলিম; ১১১]
© As Salafiyah.
সাইয়্যিদ ইবরাহীম হুসাইন কুতুব গত শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামি চিন্তাবিদদের অন্যতম। তিনি ছিলেন চতুর্দশ হিজরি শতকে ইসলামি পুনর্জাগরণের অগ্রপথিক এবং বৈশ্বিক ইসলামি আন্দোলনের প্রধানতম তাত্ত্বিকদের একজন। সেক্যুলার মডার্নিটির ব্যাপারে তাঁর বিশ্লেষণ ও সমালোচনা অত্যন্ত সমৃদ্ধ, ব্যাপক এবং সুদূরপ্রসারী।
.
সাইয়্যিদ কুতুবের জন্ম ১৯০৬ সালে, মিশরের উসইউতের একটি গ্রামের সম্ভ্রান্ত ধার্মিক পরিবারে। শৈশবেই তিনি পবিত্র কুরআন হিফয করেন এবং ১৯২০ সালে ভর্তি হন কায়রোর বিখ্যাত দারুল উলূমে। ১৯৩৩ সালে সমাপ্ত হয় শিক্ষাজীবন। তাঁর অধ্যয়নের ক্ষেত্র ছিল সাহিত্য ও শিক্ষা।
.
১৯৩৩ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত তিনি মিশরের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন। এই সময়টাতে মিশরের একজন প্রথম সারির সাহিত্য সমালোচক, বুদ্ধিজীবি এবং কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। সাহিত্য সমালোচনা, আরবি কবিতা এবং শিক্ষা নিয়ে বেশ কিছু অ্যাকাডেমিক গবেষণামূলক কাজও এ সময়ে তিনি করেছিলেন।
.
এসময়কার বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধে তিনি মিশরের রাজতন্ত্র ও ব্রিটিশ প্রভাবের কড়া সমালোচনা করেন। সরকারবিরোধী লেখালেখির কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শুরু হওয়া জটিলতার জের ধরে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অ্যামেরিকাতে। নামে প্রশিক্ষণ সফর হলেও এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মিশরের তৎকালীন উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে তাঁকে দূরে রাখা। অ্যামেরিকা সফর তাঁর চিন্তার জগতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে এবং পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সেক্যুলার মডার্নিটির বাস্তবতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাঁর কাছে।
.
১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সাইয়্যিদ কুতুব মিশরের ওয়াফদ পার্টির সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। এসময় তাঁর চিন্তার ওপর মিশরীয় কবি ও বুদ্ধিজীবি আব্বাস মাহমুদ আল-আক্কাদের ছিল বেশ প্রভাব।
.
১৯৪৫ এর পর প্রচলিত রাজনীতির ব্যাপারে তাঁর মোহমুক্তি ঘটে এবং তিনি ইসলামি দাওয়াহর ওপর মনোনিবেশ করেন। ১৯৪৮ সাল থেকে তাঁর লেখা ও চিন্তায় ক্রমশ প্রাধান্য পেতে শুরু করে ইসলামের আলোচনা। এসময় থেকে সাইয়্যিদ কুতুবের রচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়—কুরআনের আলোকে আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার বিশ্লেষণ এবং পূর্ণাঙ্গ ইসলামি সমাজ ও জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব।
.
১৯৫০ সালে দেশে ফিরে আসার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাকরি থেকে সাইয়্যিদ কুতুব পদত্যাগ করেন। ১৯৫২ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে পতন ঘটে মিশরের তৎকালীন বাদশা ফারুকের। এ অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনা ছিল ইখওয়ানুল মুসলিমীনের। চল্লিশের দশকের শেষ দিকে ইখওয়ানুল মুসলিমীন মিশরীয় সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু অফিসারকে সাথে নিয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে সরকার পতনের গোপন পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
.
জামাল আব্দুন নাসের ছিল এই অফিসারদের অন্যতম। কিন্তু প্রথম দিকে ইখওয়ানের সাথে থাকলেও পরে অফিসাররা নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়। ৫২-এর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জামাল আব্দুন নাসের এবং অন্যান্য অফিসাররা ক্ষমতায় আসে।
.
এসময় বুদ্ধিজীবি ও চিন্তাবিদ হিসেবে সাইয়্যিদ কুতুবের খ্যাতি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল, তাঁর ধ্যানধারণাগুলো প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল সমাজের বিভিন্ন স্তরে। অভ্যুত্থানের পেছনে থাকা অনেক ব্যক্তি সাইয়্যিদ কুতুবের একনিষ্ঠ পাঠক ছিল এবং অভ্যুত্থানের আগে তাঁর বাসায় নাসেরসহ আরও অনেকের আসা-যাওয়াও ছিল নিয়মিত। এজন্য অনেকে বলে থাকেন—কুতুব ছিলেন ৫২’র বিপ্লবের তাত্ত্বিক।
.
ইখওয়ানের মতো কুতুবও আশা করেছিলেন ক্ষমতার পরিবর্তনের পর ইসলামি ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে। কিন্তু নাসের এবং অফিসারদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। ক্ষমতায় আসার পর জামাল আব্দুন নাসের এবং অফিসারদের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় ইখওয়ানুল মুসলিমীনের দমন।
.
কুতুব তখনো ইখওয়ানে যোগ দেননি। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার কারণে নাসের তাঁকে ইখওয়ানের মোকাবিলায় দাঁড় করাতে চাচ্ছিল। এজন্য তাঁকে প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরে তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শেষপর্যন্ত তাঁর পছন্দের যেকোনো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
.
কিন্তু ততদিনে কুতুব বুঝতে পেরেছিলেন—নাসের এবং অন্যান্য অফিসারদের ইসলামি শাসনের প্রতি কোনো আন্তরিকতা নেই, তারা সেক্যুলার শাসনেই আগ্রহী। তিনি সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং এখানেই নাসের ও অন্যান্য অফিসারদের সাথে তাঁর সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে। অল্প কিছুদিন পর ইখওয়ানুল মুসলিমীনে যোগদান করেন সাইয়্যিদ কুতুব। যোগ দেওয়ার প্রায় সাথে সাথেই তাঁকে দাওয়াহ ও প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তিনি ইখওয়ানের উচ্চপদস্থ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যে পরিণত হন।
.
১৯৫৪ সালে ইখওয়ানুল মুসলিমীনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, বন্দি হন কুতুবসহ ইখওয়ানের অন্যান্য প্রধান নেতা এবং অসংখ্য সাধারণ নেতাকর্মী। কুতুবসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের ওপর জেলে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়। ১৯৫৫ সালে মিশরের কুখ্যাত তোরা কারাগারে হত্যা করা হয় ইখওয়ানের ৭ জন নেতাকে।
১৯৭০ এর দশকে প্রথম আমেরিকায় ছেলে-মেয়ে একসাথে পড়াশোনা অর্থাৎ কো-এডুকেশন শুরু হয়। এমনকি হার্ভার্ডের মত বিশ্ববিদ্যালয়েও ছেলে-মেয়ে আলাদা ক্যাম্পাস ছিলো। তারপর ১৯৭০ এর দশকে ছেলে-মেয়ে এক ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়। কেন জানেন? ইয়েল, হার্ভার্ড, প্রিন্সটনের মত ভার্সিটিগুলো দেশ সেরা ছাত্রদেরকে নিজেদের ভার্সিটিতে ভর্তি করাতে চাইতো। তারপর এ ভার্সিটিগুলোর কর্তৃপক্ষ চিন্তা করলো, এটা করা যাবে, যদি ক্যাম্পাসে মেয়ে আনা হয়। তাহলে ছাত্ররা এখানে বেশি বেশি ভর্তি হতে চাইবে।
.
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির স্কলার ও লেখক ন্যান্সি মার্কেল তাঁর বইয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সে সময়ের নারীবাদিরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলো। বিখ্যাত ফেমিনিস্ট গ্লোরিয়া স্টাইনাম এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁর মতে, কো-এডুকেশন আসলে নারীর সম্মানের জন্য ক্ষতিকর। এভাবে নারী থেকে সম্ভাবনা ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং পুরুষদেরকে বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ নারী দেহের লোভ দেখিয়ে ছেলে আকর্ষণ করার বিষয়টি তখন নারীবাদিরাও বুঝতো।
.
অথচ এখনকার মেয়েদেরকে ঠিক এ বিষয়টিই বুঝিয়ে বললে বলে, "আমাদের ছেলে বন্ধুরা এমন না। হুজুরদের মন নষ্ট।" তারা যদি জানতো, তাদের দেহের লোভ দেখিয়ে ছেলে আনার জন্য তাদেরকে কো-এডুকেশনে দেওয়া হয়েছে!
.
- মারিয়াম তানহা।
আল্লাহর আইন সেকেলে নয়।
তারা আল্লাহর আইন দিয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করে না, কারণ এটি নাকি যুগের সাথে মানানসই না! ঈসা ইবনে মারইয়াম (আলাইহিসসালাম) তো তাদের অনেক পরে আসবেন এবং তখন আল্লাহর আইন দিয়েই শাসনকার্য পরিচালিত হবে।
কাজেই সমস্যাটা যুগের না, সমস্যা হলো যারা শাসন করছে তাদের।
/channel/AbdulAzizAtTarifi
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءٌ فَإِذَا أُصِيبَ دَوَاءُ الدَّاءِ بَرَأَ بِإِذْنِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
.
"প্রতিটি ব্যাধির প্রতিকার রয়েছে। অতএব রোগে যথাযথ ঔষধ প্রয়োগ করা হলে আল্লাহর ইচ্ছায় আরোগ্য লাভ হয়"[১]
.
.
এই হাদিস প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে ইমাম নববী {রাহ.] বলেন,
هَذَا الْحَدِيثِ إِشَارَةٌ إِلَى اسْتِحْبَابِ الدَّوَاءِ وَهُوَ مَذْهَبُ أَصْحَابِنَا وَجُمْهُورِ السَّلَفِ وَعَامَّةِ الْخَلْفِ
"ওষুধ/চিকিৎসা গ্রহণ যে মুস্তাহাব এই হাদিস সেদিকে ইশারা করে, এটাই আমাদের সাথীদের মাযহাব, সালাফের অধিকাংশ ও খালাফের সবার মাযহাব...
وَفِيهَا رَدٌّ عَلَى مَنْ أَنْكَرَ التَّدَاوِيَ مِنْ غُلَاةِ الصُّوفِيَّةِ وَقَالَ كل شيء بقضاء وقدر فلاحاجة إِلَى التَّدَاوِي
"বাড়াবাড়িকারী সুফীরা ওষুধ গ্রহণ/ চিকিৎসা গ্রহণকে অস্বীকার করতো এই বলে যে সব কিছুই ক্বাদা ও কদর অনুযায়ী হয়, তাই আমাদের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই-এই হাদিস এই দাবিকে খণ্ডন করে দেয়"[২]
.
আজকাল মুসলিমদের মধ্যেও কিছু অকাল্টিস্টের আবির্ভাব হয়েছে। জাস্ট তাদের জন্য এসব বর্ণনা সামনে আনার দরকার পড়ে।
.
.
[১) ইমাম মুসলিম (রাহ.), আস সহিহ, হা: ২২০৪;
২) শারহুন নাওয়াউই: ১৪/১৯১]
অর্পাকে চেনেন?
আরে অর্পা! আপনার বোন। চেনেন না ওকে?
আচ্ছা চিনিয়ে দেই।
.
নাম অর্পা সাহা। ময়মনসিংহের মেয়ে। বয়স ১৯/২০। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, যেভাবে ইচ্ছা হিদায়াত করেন। অর্পা তাওহীদের চিরন্তন সত্যকে চিনতে পারে কিছু ইসলামী বই পড়ে । আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে ভালোবেসে অর্পা ইসলাম গ্রহণ করে।
.
ডিসেম্বরের ৫ তারিখ ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অ্যাফিডেভিট করে অর্পা আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের নাম ও ধর্ম পরিবর্তন করে। ওর নাম এখন ফাতেমা রাহমান।
.
কিন্তু অর্পা তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাঁধার সম্মুখীন হয়। ওর ওপর নির্যাতন করা হয়। শিরক ছেড়ে তাওহীদ গ্রহণ কারণে পরিবারের কাছে নির্যাতিত হওয়া...সাহাবী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এর সময়ের মতো পরীক্ষা।
.
১০-ই ডিসেম্বরে অর্পা জিডি করে। পরিবারের পক্ষ থেকে শারীরিক অত্যাচার ও হত্যার আশঙ্কার কারণে। তারপর মুসলিম বোনের ঘরে আশ্রয় নেয় ও।
.
সেই বাসা থেকে অর্পাকে “জিজ্ঞাসাবাদের জন্য” থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখান থেকে জোর করে অর্পাকে তুলে দেয়া হয় তার বাবা-কাকার কাছে। সেই বাবা-কাকা যাদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে অর্পা জিডি করেছিল!
.
পুলিশের কাছে বাবা-কাকা লিখিত দেয়, অর্পাকে স্বাধীনভাবে ইসলাম ধর্ম পালন করতে দেয়া হবে। সবার সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হবে। সে একজন মুসলিম হিসেবে থাকবে।
.
অর্পার বান্ধবীর ভাষ্যমতে, বাসায় নিয়ে যাবার পর অর্পাকে পর্দা করতে দেয়া হয়নি। ইসলাম পালন করতে দেয়া হয়নি। বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে সব রকম যোগাযোগও। সেই সাথে চলছে ইসলাম ছেড়ে আসার জন্য মানসিক নির্যাতন।
.
অর্পার বান্ধবী ১৩ ডিসেম্বর তাকে উদ্ধারের জন্য মামলা করেন। কিন্তু ওয়ারেন্ট আসার পরও প্রশাসন তাকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সাম্প্রতিক ইতিহাসের দিকে তাকালে মনে হয়, এমন কোন ব্যবস্থা নেয়ার সম্ভাবনাও নেই।
.
এই হল অর্পার গল্প।
.
১১ তারিখ থেকে, আজ প্রায় দু সপ্তাহ আমাদের বোনটা বন্দী। এই দুই সপ্তাহ সে সালাত আদায় করতে পেরেছে কি না, জানি না। এই দিনগুলো, এই রাতগুলো কিভাবে কেটেছে মেয়েটার?
.
অর্পার জন্য আমার, আপনার কিছু কি করার নেই? একটা মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে কারণ সে বলছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ – এই মানুষটা কি আমাদের সাহায্য পাবার যোগ্য না? সাহায্য করা কি আমাদের দায়িত্ব না?
.
হ্যাঁ, আপনার সামর্থ্য কম। আমি জানি। আমার সামর্থ্যও কম। কিন্তু কম হলেও কিছু তো সামর্থ্য আছে। আর কিছু না হোক, আপনি অর্পার খবরটা নিজের পরিচিত সবার কাছে পাঠাতে পারবেন। সবাইকে এ নিয়ে কথা বলতে বলতে পারবেন। আমার সবাই মিলে চাইলে পুরো বাংলাদেশকে ওর কথা জানিয়ে দিতে পারবো।
.
মসজিদের মিম্বরে, ওয়াজের মঞ্চে, বন্ধুদের আড্ডায়, ফেইসবুকের পোস্টে কিংবা লাইভে অর্পার কথা বলতে পারেন। যারা পত্রিকাতে কাজ করেন, তারা নিউস করতে পারেন। ইউটিউবাররা তারা ভিডিও বানাতে পারেন। ইউটিউবারদের পরিচিতরা তাদেরকে এব্যাপারে কথা বলতে উৎসাহিত করতে পারেন। সেলিব্রিটিও বক্তা এবং দা’ঈরা একটা ৫ মিনিটের ছোট্ট ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন। এতো লাইক, ভিউস, ফলোয়ার আর বই দিয়ে কী হবে, যদি আমরা একজন মুওয়াহ্হিদাহর জন্য এতোটুকু করতে না পারি?
.
সাধারণ মানুষদের মধ্যে যাদের প্রভাবশালীদের সাথে যোগাযোগ আছে, তারা অর্পাকে আইনী বা অন্য কোন ভাবে সাহায্য করার ক্ষেত্রেও কাজ করতে পারেন। এর কোন কিছু না পারলে, অন্তত দুআকরতে পারবেন।
.
সীমিত হলেও এই সামর্থ্যগুলো তো একেবারে কম না, তাই না?
.
আল্লাহ এমন কোন বোঝা দেন না, যা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। যা আপনার পক্ষে করা সম্ভব না, তা নিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করা হবে না। কিন্তু যতোটুকু আপনার দ্বারা করা সম্ভব, সেটুকু আপনি করেছেন কি না – সেটা নিয়ে অবশ্যই আমাকে এবং আপনাকে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
.
আসুন, আমরা অর্পাকে; আমাদের বোনটাকে, সাহায্য করি। এই উম্মাহর অনেক বড় অংশের জন্য আমরা কিছু করতে পারি না। আমাদের সেই সক্ষমতা নেই। সেটা নিয়ে আমাদের দুঃখ হয়, কষ্ট হয়। কিন্তু অর্পার জন্য কিছু করা সম্ভব। আমরা অন্তত সেই চেষ্টাটা করি। আসুন অর্পার জন্য আওয়াজ তুলি।
.
আল্লাহ ফাতিমাকে তাওহীদের ওপর, দ্বীনের ওপর দৃঢ় রাখুন। তাকে শিরক এবং কুফর থেকে হেফাযত করুন। আল্লাহ আল-কাহির, আল-কাহির, তিনি সকল কিছুর ওপর শক্তিশালী। যদি আমরা আমাদের চেষ্টাটুকু করি, তাহলে তিনি চাইলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব।
Vaiya Asif Adnan
"হালাল রিযিক তালাশের পূর্বে যে ধরণের নিয়ত করা জরুরী:
১) প্রথম নিয়ত হলো- যেহেতু হালাল রিযিক তালাশ করা ফরযে আইন, তাই তাকে একটি ফরয ইবাদত আদায় করার নিয়তে করতে হবে,
.
২) হালাল রিযিক তালাশ করা ফরয; কেননা তা ইবাদতের মাধ্যম। খাদ্য ছাড়া ইবাদত করা যায় না এবং হালাল খাদ্য ছাড়া ইবাদত কবুল হয় না। তাই বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য হয় এমন ইবাদত করার নিয়তে রিযিক তালাশ করতে হবে।
.
৩) তৃতীয় নিয়ত হচ্ছে- হালাল সম্পদ ও হালাল উপার্জন দ্বারা ইবাদত তথা নামায, যাকাত, রোযা, হজ্বের প্রস্তুতি, জেহাদ, সদকা, খায়রাত ইত্যাদির নিয়ত করতে হবে। মোটকথা সম্পদের হক সমূহ আদায় করবে।
.
৪) চতুর্থ কথা হল- হালাল সম্পদ উপার্জন যেমন নিজের জন্য জরুরী, তেমনি নিজের পরিবারের জন্যও জরুরী। তাই তাদেরও নিয়ত করতে হবে সেখানে জেহাদের পুণ্য রয়েছে।
.
৫) পঞ্চমত নিয়ত করতে হবে যে, যদি মহান আল্লাহ চাহিদার তুলনায় বেশী দান করেন তখন তা থেকে আল্লাহর দ্বীনের ঝান্ডাকে বুলন্দ করার খাতে ব্যয় করব সৃষ্টির সেবায় ও ধর্মের খেদমতে ব্যয় করব।
.
উল্লিখিত নিয়ত সমূহের দ্বারা মানুষের জন্য হালাল উপার্জনের রাস্তা সহজ হয়ে যাবে।
.
উল্লিখিত নিয়তসমূহ পাওয়া এজন্য জরুরী; কেননা ইসলামী জীবন-যাপনে সম্পদ উপার্জন উদ্দেশ্য নয়; বরং তা উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক। মানব সৃষ্টির লক্ষ্য তো ইবাদত করা। যেখানে মানুষের খেদমত ও ধর্মের খেদমত উদ্দেশ্য, তাই যখন কারো সামনে সম্পদ উপার্জনের লক্ষ্য স্মরণ থাকবে, তখন সে উক্ত উদ্দেশ্য অনুযায়ী উপার্জন করবে এবং উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যশীল উপকরণ গ্রহণ করবে, আর লক্ষ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী উপকরণ পরিত্যাগ করবে।"
.
~মুফতি আবদুছ ছালাম চাটগামী [রাহ.]
.
.
[ ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতি, পৃ: ৯৭, ডিসেম্বর ২০১৯ ঈ.]
©Manzurs Post
কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকায় ঈমানের স্বাদ লাভ
মুসনাদে আহমাদে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে :
ما من مسلم ينظر إلى محاسن امرأة أول مرة، ثم يغض بصره إلا أحدث
الله له عبادة يجد حلاوتها
‘কোনো মুসলিম যখন প্রথমবার কোনো নারীর সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টি পড়ার পর স্বীয় দৃষ্টি নত করে নেয়, আল্লাহ তাআলা তার ইবাদতে স্বাদ দান করেন।
তাবারানী শরীফে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়া সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে :
من تركها من مخافتي أبدلته إيمانا يجد حلاوته في قلبه
‘যে আমার ভয়ে কুদৃষ্টি পরিহার করে আমি তাকে এমন ঈমান দান করি যার স্বাদ সে অন্তরে অনুভব করে।' কতই-না লাভজনক সওদা! কুদৃষ্টির অস্থায়ী ও কৃত্রিম স্বাদ পরিহারে ঈমানের স্থায়ী মিষ্টতা ও স্বাদ লাভ হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তাআলা এমন ব্যক্তির অন্তরে প্রশান্তি ঢেলে দেবেন। তা ছাড়া নিয়মও এটাই যে, আমলের প্রতিদান অনুরূপ জিনিস দিয়েই দেয়া হয়। সুতরাং যে পরনারীকে দেখার স্বাদ বর্জন করবে আল্লাহ তাআলা তাকে ইবাদত ও ঈমানের পরম স্বাদ দান করবেন।
" ইহকালে মানুষ আপনার কথা সারাজীবন স্মরণ করলে কী লাভ যদি আপনি পরকালে সারাজীবন আগুনের অধিবাসী হয়ে যান । "
- শাইখ আব্দুল আযীয আল তারিফী ফাক্কাল্লাহু আসরহ
/channel/AbdulAzizAtTarifi